পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কৃষ্ণনগরের রিকশ চালক মুকুল শেখ বলেন, বহু বছর ধরে রিকশ চালাই। জানি, লক ডাউন চলছে। প্রথমে বাইরে রের হইনি। কিন্তু পেট চালাতে হবে তো, তাই একটু বেরতে হচ্ছে। খুব একটা লাভ হচ্ছে না। সারা দিন কষ্ট করে একবেলার খাবারের টাকাটুকু জোটাতে পারছি। তার মধ্যে পুলিসের তাড়া রয়েছে। একদিকে খাবার নেই, অন্যদিকে আবার ভয় আছে। কী করব কিছুই বুঝছি না। কৃষ্ণনগরের টোটো চালক অসীম দে’র সংসার চলে টোটোর চাকায় ভর করে। প্রায় ১২দিন হয়ে গেল বাড়িতে বসে আছেন তিনি। লকডাউন চলায় টোটো নিয়ে বাইরে বের হওয়ার জো নেই। তিনি বলছিলেন, ঘরে সামান্য কিছু চাল পড়ে রয়েছে। পাঁচজনের সংসার। এবার কী হবে, কোথা থেকে জুটবে খাবার সেই চিন্তা করতে করতে রাতে ঘুমোতে পারছি না। এদিকে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না। টোটো বন্ধ থাকায় সংসারে আর্থিক টান পড়েছে। টোটো ফের রাস্তায় না চলা পর্যন্ত আয়ের অন্য কোনও পথও খোলা নেই। এই পরিস্থিতি কবে আবার স্বাভাবিক হবে, কে জানে! চাল ছাড়া বাকি যা কিছু খাদ্যসামগ্রী ছিল তাও শেষ হয়ে গিয়েছে। যদিও একটি সংস্থা কিছুটা চাল দিয়েছে। গত একবছর টোটো চালিয়েই সংসার চালাচ্ছি। একসময় বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তারপর সংস্থা বন্ধ হয়ে গেল। বাধ্য হয়ে টোটো নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ি। টোটো চালিয়ে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশো টাকা আয় হতো। সেই টাকা দিয়েই চলত সংসার। এখন সেই আয় একেবারে বন্ধ। হাতে যা টাকা ছিল সবই ফুরিয়ে গিয়েছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে চলছে সরকারি ছুটি। প্রায় সব অফিস-আদালত এখন বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। ফলে রিকশচালক বা টোটোচালক একেবারেই যাত্রী পাচ্ছেন না। জামাকাপড় সেলাই করে সামান্য উপার্জন করে কোনওমতে সংসার টেনে নিয়ে যান চাপড়ার জামাতুল্লা বিবি। লকডাউনে হাতে কোনও কাজ নেই। ফলে ফুরিয়েছে টাকা। কখনও পড়শি কখনও কোনও সংস্থার সাহায্যে ভাত, ডাল জুটছে। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভাবলেই চরম উদ্বেগ ও আশঙ্কা গ্রাস করছে তাঁকে। জামাতুল্লা বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর সেলাই মেশিনই সংসার চালানোর হাতিয়ার হয়ে ওঠে। কিন্তু লকডাউনের জেরে কেউ কাপড় সেলাই করাতে আসছে না। ছেলে-মেয়ে আছে, কী করব, কোথায় যাব ভাবতে পারছি না।