পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শালবনীর জলহরি গ্রামের এক ঠিকাদারের হাত ধরে বেশ কয়েকবছর আগে মুর্শিদাবাদ থেকে ১১জন রাজমিস্ত্রি কাজ করতে এসেছিলেন। গ্রামের একটি বাড়িতে ঘরভাড়া নিয়ে তাঁরা থাকতেন। লকডাউন ঘোষণার পর তাঁরা বাড়ি চলে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু, রাস্তায় বাধা পেয়ে ফিরে আসেন। দূরত্ব বজায় রেখে সকলকে থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়। একটি ঘরেই ১১জন গাদাগাদি করে ছিলেন। বিষয়টি গ্রামবাসীরা জানার পর গ্রামেরই একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র তাঁদের জন্য খুলে দেন। আর ঠিকাদার তাঁদের রান্নার গ্যাস থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করেন। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের চাল, আলু দেওয়া হয়। তবে, কয়েকদিন খাওয়ার পর তা ফুরিয়ে যায়। গ্রামবাসীরা বিষয়টি জানতে পেরে তাঁদের ৩০ কেজি চাল দিয়ে সাহায্য করেছেন।
শ্রমিক মাজিরুল শেখ বলেন, লকডাউনের পর তো আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, রোজগার নেই। বাড়ি চলে গেলে ভালো হতো। কিন্তু, যাওয়ার কোনও উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে এখানে রয়েছি। প্রশাসন, ঠিকাদার আর গ্রামবাসী সকলেই আমাদের সাহায্য করছেন। একটি ঘরে একসঙ্গে অতজন থাকার ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই একটি স্কুলঘরের চাবি আমাদের দেওয়া হয়েছে।
ঠিকাদার বলেন, বহুদিন ধরে এই শ্রমিকরা আমাদের এলাকায় কাজ করছেন। ফলে, তাঁরা পরিবারের সদস্যের মতো হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের কোনও যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য আমরা যতটা পারছি সাহায্য করছি। গ্রামবাসীরাও এগিয়ে এসেছেন।
জলহরি গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সদস্য অলীক সাহা বলেন, ওদের অসহায় অবস্থায় আমরা গ্রামবাসী হিসেবে সাহায্য না করলে কে করবে? কোনও অসুবিধা হলে আমাদের জানাতে বলেছি। আমরা গ্রামের সকলে ওদের পাশে রয়েছি।
অন্যদিকে, লকডাউনে শালবনীর মেলদা গ্রামে বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক আটকে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁরা কোনও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ। তবে, গ্রামবাসীদের কাছে থেকে বিক্ষিপ্তভাবে তাঁরা সাহায্য পেয়েছেন। শ্রমিক কালাম শেখ বলেন, এতদিন যা মজুত ছিল, তাই দিয়ে চলেছে। এখন কাজ নেই, টাকাও ফুরিয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে আনা হচ্ছে।