বিএনএ, মেদিনীপুর: দাসপুরের করোনা আক্রান্ত যুবকের সঙ্গে মুম্বই থেকে আসা বন্ধুদের এখনও হদিশ মিলছে না। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২২ তারিখ ডাউন শালিমার-মুম্বই কুর্লা এক্সপ্রেসে এস-৭ কোচে ওই যুবক এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে আরও তিন-চারজন বন্ধু ছিলেন। টিকিট না কেটেই তাঁরা ট্রেনে চেপেছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। পাঁশকুড়া স্টেশনে নেমে মারুতি গাড়ি করে তাঁরা বাড়ি যান। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, ওই যুবক যে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিলেন, তাঁদের আমরা এখনও চিহ্নিত করতে পারিনি। জেলার সব ব্লকেই আমাদের পঞ্চায়েত স্তরে টাস্ক ফোর্স রয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীরা রয়েছেন। তাঁরা ওই যুবকের সঙ্গে আসা বন্ধুদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করছেন।
দাসপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুনীল ভৌমিক বলেন, ওই গ্রামে ঢোকার মুখে নাকাচেকিং চলছে। গ্রামে ১৫৫টি পরিবার রয়েছে। তাদের কাছে পঞ্চায়েতের টাস্ক ফোর্স এদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওষুধ, মশলা পৌঁছে দিয়েছে। কাউকে গ্রামের বাইরে এদিন বের হতে দেওয়া হয়নি। গ্রামের ভিতরেও কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তবে, ওই যুবক কোন মারুতি গাড়ি করে গ্রামে ফিরেছিলেন, তার হদিশ আমরা পাইনি। বন্ধুদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।
অন্যদিকে, করোনা হাসপাতালের জন্য আয়ুষ হাসপাতাল ছাড়াও শহর লাগোয়া একটি নার্সিংহোমকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিন হাসপাতালের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারা যান। শালবনী জাগরণ ও সৃষ্টি সোসাইটি নামে একটি সংস্থার পক্ষ থেকে এদিন শালবনীর মুদি ব্যবসায়ী, সব্জি বাজারের দোকানদার ও ক্রেতাদের হাতে মাস্ক ও স্যানিটাইজার তুলে দেন। এদিন মণিদহ এলাকায় মেদিনীপুর সদর ব্লকের ৫৪জন ভিলেজ রিসোর্স পার্সন মাস্ক না পাওয়ায় জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানান। তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা এই সময় গ্রামে ঘুরে ঘুরে কাজ করছেন। সবথেকে বেশি মাস্ক তাঁদেরই প্রয়োজন। কিন্তু, এখনও মাস্ক দেওয়া হয়নি।
জেলা পুলিস প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা সংক্রান্ত বা অন্য কোনও সমস্যা নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। ওই হেল্পলাইনে অভিযোগ জানানোর পর জেলার বিভিন্ন থানার পুলিস বয়স্ক লোকজনদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পক্ষ থেকে পুলিসকর্মীরা বয়স্ক মানুষজনদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাজার, ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন। এদিন মেদিনীপুর শহর লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে এক রোগীর পরিবারের লোকজন রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ান। কিন্তু, লকডাউনের জেরে রক্ত না পাওয়ায় তাঁরা কোতোয়ালি থানার দ্বারস্থ হন। থানার পক্ষ থেকে ওই রোগীর পরিবারের হাতে দু’বোতল রক্ত পৌঁছে দেওয়া হয়। তারমধ্যে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার রক্ত দিয়েছেন। এদিন মেদিনীপুর শহরের শ্রেয়সী মহাপাত্র নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মহকুমা শাসকের দপ্তরে এসে কন্যাশ্রীতে পাওয়া ৩০০০ টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তুলে দেয়।