বিএনএ, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদে বাইরে থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের জন্য গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করছেন। সেখানে থাকতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার বন্দোবস্তও করছেন তাঁরা। সামশেরগঞ্জের ভবানীবাটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এরকম কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের আলাদাভাবে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তাঁদের খাবারেরও ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয়রা। গ্রামবাসীরা বলেন, তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার যাতে সুস্থ থাকে, সেকারণেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপাতত সেখানে ১৪ জন রয়েছেন। আগামী দিনে সংখ্যাটা আরও বাড়বে। অনেকেই মাঝ রাস্তায় আছেন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে হেঁটেই তাঁরা গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আগামী দিনেও যাঁরা বাইরে থেকে ঘরে ফিরবেন, তাঁদের জন্যও একইরকম ব্যবস্থা করা হবে। গ্রামের বাসিন্দা বজলুর রহমান বলেন, যাঁরা গ্রামে ফিরেছেন, তাঁদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। বাড়িতে আলাদাভাবে থাকার জন্য রুম নেই। সেকারণেই আমরা ওঁদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা করেছি। গ্রামের ছেলেরা হেঁটেই গ্রামে ফিরছেন। বুধবার তিন যুবক ওড়িশা থেকে হেঁটে গ্রামে এসেছেন।
প্রসঙ্গত, বাইরের রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকরাই জেলা প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ৩৩ হাজারের বেশি শ্রমিক সরকারিভাবে জেলায় ফিরেছেন। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে আধিকারিকরা মনে করছেন। এই জেলার কান্দি এবং বহরমপুর মহকুমার বহু ব্যক্তি সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই বিমান চলাচল বন্ধ হওয়ার আগে জেলায় ফিরেছেন। বিদেশ থেকে ফিরে আসা ৭৭৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। প্রশাসন তাঁদের উপর বাড়তি নজর রেখেছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, যাঁরা কেরল, দিল্লি বা অন্যান্য রাজ্যে আটকে রয়েছেন, তাঁরা নিয়ম না মেনে ফিরতে শুরু করলে সমস্যা হবে। অনেকে প্রশাসনকে না জানিয়েও গ্রামে ফিরছেন। তাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাচ্ছেন না। তবে গ্রামের বাসিন্দারা আগের থেকে অনেক সচেতন হয়েছেন। বাইরে থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের তাঁরা বাড়িতে আটকে রাখছেন। অনেক গ্রামে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, যাঁরা বাইরে থেকে ফিরছেন তাঁদেরকে প্রথম থেকেই বাড়িতে থাকার জন্য বলা হয়েছে। তবে কিছু কিছু গ্রামের বাসিন্দারা যেভাবে সচেতনতার পরিচয় দিচ্ছেন তা প্রশংসনীয়।