কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মাঝ নদী থেকেই ৩৮ বছরের মোতাহার সোমবার রাতে বলেন, মণিপুরের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে কাপড়, মশারি, গামছা ফেরি করি। লকডাউনের দিন মণিপুরের খেরজুল জেলার তিপাইমুখ গ্রামে গিয়ে আটকে পড়েছিলাম। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফেরার কোনও রাস্তা ছিল না। গ্রামবাসীরা এলাকা থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। কাকুতি মিনতি করা সত্ত্বেও ওরা জানিয়ে দেয়, গ্রামে থাকা যাবে না। তবে গ্রামের পাশে বরাট নদীতে থাকলে তাঁদের কোনও অসুবিধা নেই। তাতেই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। নৌকায় ওঠার আগে গ্রামের লোকজন একটা কুমড়ো দিয়েছিল। সেটা আর নদীর জল খেয়েই কয়েকদিন কাটিয়েছি। ওই গ্রামের লোকজনদেরও আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। সেকারণেই হয়তো ওরা অন্য কিছু দিতে পারেনি। কুমড়ো আর নদীর জল খেয়ে শরীরও খারাপ করছিল। তিনি আরও বলেন, পেটে খিদে থাকলেও দিনের বেলা নদীতে নৌকায় থাকতে তেমন অসুবিধা হতো না। কিন্তু রাতের অন্ধকার নামলেই ভয় পেয়ে যেতাম। নদীর পাড়েও তখন কেউ থাকত না। চারদিকে নিস্তব্ধতা নেমে আসত। অবশেষে মঙ্গলবার গভীর রাতে স্থানীয় থানার পুলিস আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিসের নির্দেশে বুধবার সকালে গ্রামবাসীরাই খাবারের ব্যবস্থা করেন। গ্রামে থাকার বন্দোবস্তও করা হয়েছে।
মোতাহারের ভাই বাদিরুল শেখ বলেন, আমরাও অসমে আটকে রয়েছি। নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছি। কিন্তু দাদার অবস্থা আরও খারাপ ছিল। ও পাঁচ বছর ধরে মণিপুরের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে কাপড়, মশারি ফেরি করে। চার মাস আগে বাড়ি ফিরেছিল। তারপর থেকে সেখানেই রয়েছে। দাদা ফোন করে আমাকে সমস্যার কথা জানায়। শুধু কাঁচা কুমড়ো আর নদীর জল খেয়েই তার দিন কাটছিল। রাতের বেলা মাঝ নদীতে নৌকায় থাকার সময় তার অন্য বিপদও হতে পারত। জঙ্গিপুরের পুলিস সুপারের উদ্যোগে সে প্রাণে বেঁচেছে। উনি দাদার সমস্যার কথা কোনওভাবে জানতে পেরে মণিপুর পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি শোনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সে রাজ্যের পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপরেই মণিপুর পুলিস সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। মোতাহার বলেন, প্রাণে বাঁচব বলে ভাবতে পারেনি। রাত নামলেই ভাবতাম হয়তো মৃত্যু নেমে আসছে। জঙ্গলে ঘেরা নদীর মাঝে মৃত্যু হলেও দেখার কেউ ছিল না।