বিএনএ, বহরমপুর: বৃহস্পতিবার সচেতনতার প্রমাণ দিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দারা। এদিন খুব দরকারে বাধ্য না হলে কেউই পথে বেরোননি। পুলিসকে লাঠিচার্জ করে কাউকে ঘরে ঢোকাতে হয়নি। বাইকের তাণ্ডবও দেখা যায়নি। পাড়ার মোড়ে ঠেকও সেভাবে বসেনি। বহরমপুর, কান্দি, জঙ্গিপুর, লালবাগ, ডোমকল সহ সব শহরের ছবিটা একইরকম ছিল। গ্রামের লোকজনও ঘরবন্দি হয়েছিলেন। যাঁরা বাজার করতে বেরিয়েছিলেন তাঁরাও নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে কেনাকাটা করেন। সংসার চালানোর তাগিদে অন্য পেশার লোকজনদেরও কেউ কেউ সব্জি বিক্রি করেছেন। জেলার কান্দি, বেলডাঙা, শক্তিপুরের মতো বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার ব্যক্তি দুধ, পনির এবং ছানার ব্যবসা করেন। বাইরে দুধ এবং ছানা পাঠাতে না পারায় তাঁরা বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। পাশাপাশি সমস্যা বেড়েছে জঙ্গিপুরের বিড়ি শ্রমিকদের। অনেক বিড়ি শ্রমিকের দিনমজুরির টাকাতেই সংসার চলে। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের ঘুম উড়েছে। তবে জেলার বাসিন্দারা সমস্যায় থাকলেও সচেতনতার পরিচয় দেওয়ায় স্বস্তিতে রয়েছেন আধিকারিকরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, করোনার আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে ঘরবন্দি হয়ে থাকা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। যাঁরা বাইরের রাজ্য বা ভিন দেশ থেকে এসেছেন তাঁদের কোনও অবস্থাতেই এখন বেরনো চলবে না। জেলার মানুষজন ঘর থেকে না বেরিয়ে সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি বাজারে গণ্ডি কেটে দেওয়া হয়েছিল। ওই গণ্ডির মধ্যে থেকেই সব্জি বা অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য বলা হয়েছিল। সকালের দিকে জিয়াগঞ্জের মতো কয়েকটি জায়গায় গণ্ডি না মেনে লোকজন ভিড় করতে থাকে। বেলা গড়াতেই অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ডোমকলের জনকল্যাণ ময়দানে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে সব্জি বিক্রেতাদের বসতে দেখা যায়। ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদেরও নিয়ম মেনে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এদিন ধুলিয়ান, বেলডাঙা, ইসলামপুর, ফরাক্কা সহ সব এলাকাতেই পুলিস টহল দিতে থাকে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে নাকা চেকিং চলে। পুলিস সুপার অজিত সিং যাদব বলেন, রাস্তায় বেরিয়ে জমায়েত করার জন্য এদিন কাউকে গ্রেপ্তার করতে হয়নি। এদিন রাস্তায় লোকজন খুব কম বেরিয়েছিলেন। এই কয়েকদিন সবাইকে এই নিয়ম মেনেই চলতে হবে। অতিরিক্ত সামগ্রী মজুত না করার জন্য বলব। এছাড়া কোনও ব্যবসায়ী কালোবাজারি করলে তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।