সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: করোনা সংক্রমণ রুখতে লক ডাউনের জেরে আপাতত শুক্রবার পর্যন্ত নবদ্বীপ ও মায়াপুরের সমস্ত মঠ-মন্দির বন্ধ থাকছে। এই প্রথমবার ইসকনের মূল গেট বন্ধ করে ভক্তদের প্রবেশ নিষেধ করা হল। কিছু ভক্ত মন্দিরের বাইরেই প্রণাম করছেন। সোমবার বিকেল ৫টার পর থেকেই মন্দিরনগরী নবদ্বীপ ও মায়াপুরের বেশিরভাগ মঠ-মন্দির বন্ধ করা হয়েছে। মঠ-মন্দির কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত লক ডাউন মেনে নিয়ে মঠ-মন্দিরের ভিতরে ভক্তদের জমায়েত রুখতে সোমবার বিকেল থেকে ৩১মার্চ পর্যন্ত মঠ-মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নবদ্বীপ পুরাতত্ত্ব পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শান্তিরঞ্জন দেব জানান, ভাগীরথীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে মায়াপুর-নবদ্বীপ মিলিয়ে প্রায় শতাধিক মঠ ও মন্দির বন্ধ করা হয়েছে। ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস মহারাজ বলেন, এই প্রথম ইসকনের মেন গেটে তালা দিয়ে ভক্তদের প্রবেশ নিষেধ করা হল।
নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান আশ্রম, মহাপ্রভু পাড়ার ধামেশ্বর শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দির, পোড়ামাতলার পোড়ামা, ভবতারিণী, ভবতারণ শিব মন্দির, সোনার গৌরাঙ্গ মন্দির, গানতলার বলদেব জিউ মন্দির সবই বন্ধ ছিল। নবদ্বীপের শ্রীবাস অঙ্গন রোডের ঐতিহ্যবাহী সোনার গৌরাঙ্গ মন্দিরের স্বরূপ দামোদর গোস্বামী বলেন, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে আমাদের সোনার গৌরাঙ্গ দর্শন ১৮মার্চ থেকেই বন্ধ আছে। পোড়ামাতলার পূজারি মানিকলাল ভট্টাচার্য বলেন, পোড়ামা, ভবতারিণী, ভবতারণ শিবের নিত্যপুজোর পর মন্দির বন্ধ থাকছে। ভক্তরা মন্দিরের বাইরে দেবতার উদ্দেশ্যে প্রণাম করছেন।
নবদ্বীপ গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের সহ সভাপতি ও বলদেব সঙ্ঘের সম্পাদক কিশোর গোস্বামী ও নবদ্বীপ গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের সম্পাদক ও প্রাচীন মায়াপুর মহাপ্রভু জন্মস্থান আশ্রমের সম্পাদক অদ্বৈত দাস বাবাজি বলেন, নবদ্বীপের সমস্ত সাধু, বৈষ্ণব মিলিত হয়ে করোনা প্রতিরোধে লক ডাউন পালন করতে সোমবার বিকেল থেকেই ভক্তদের জন্য মঠ-মন্দির বন্ধ রাখা হয়েছে। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, এটাই কাম্য। বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন, পরিস্থিতি ঠিক হলে আবার মঠ-মন্দির খুলে দেওয়া হবে। সংক্রমণ রুখতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।