খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
এদিকে, করোনা আতঙ্কের জেরে হলদিয়া বন্দরমুখী বিদেশি জাহাজে ভারতীয় মেরিন পাইলটরা উঠতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। ফলে রবিবার রাত থেকে বন্দরে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মেরিন পাইলটরা মাঝসমুদ্রে স্যান্ডহেড থেকে নদীপথে হলদিয়া চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চালিয়ে বন্দরে নিয়ে আসেন এবং পৌঁছে দেন।
এদিন সকাল থেকে করোনা সতর্কতায় পুরসভার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীরা বিশেষ পোশাক পরে হাইওয়ে ট্রাকারদের মেডিকেল চেকআপ শুরু করেন। ব্রজলালচকের অদূরে এলোকেশী মোড়ে ৪১নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে পাঞ্জাবি ধাবার কাছে পুরসভার উদ্যোগে করোনা ক্যাম্প তৈরি হয়েছে। হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল(স্বাস্থ্য) আজিজুল রহমানের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে মেডিকেল ক্যাম্প। ক্যাম্প চালাতে ভবানীপুর থানার পুলিসও সহযোগিতা করে।
আজিজুলবাবু বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে ভিনরাজ্যের যে সমস্ত ট্রাক চালক ও খালাসিরা আসছেন, তাঁদের মেডিকেল চেকআপ করে তবেই হলদিয়া শহরে প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। একজন চিকিৎসক ও তিনজন করে স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে টিম তৈরি হয়েছে। এদিন এলোকেশী মোড়, হলদিয়া বন্দরের জিসি বার্থ গেট (১নম্বর গেট) এবং চিরঞ্জীবপুর গেট(৩নম্বর) অর্থাৎ তিনটি জায়গায় ক্যাম্প করে থার্মাল স্ক্রিনিং করে শরীরের তাপমাত্রা মাপা ও করোনা গাইডলাইন মেনে মেডিকেল চেকআপ করা হয়েছে। কারও সর্দি বা কাশি রয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে। সেই অনুয়ায়ী কয়েকজনকে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তিনটি জায়গায় তিনশোর বেশি চেকআপ হয়েছে। এদের মধ্যে ভিনরাজ্যের এক ট্রাক চালকের দেহের তাপমাত্রা ৯৮.৪এর উপর। তাঁকে বাড়ি ফিরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, করোনা আতঙ্কের জেরে বেঁকে বসেছেন হলদিয়া বন্দরের মেরিন ক্রু ও মেরিন পাইলটরা। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত থেকে মেরিন পাইলটরা বিদেশি জাহাজে উঠতে চাইছেন না। ফলে বন্দরে পণ্য বোঝাই করে জাহাজ দাঁড়িয়ে থাকলেও তা বেরতে পারছে না। ১৪টি বার্থে জাহাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে। কয়েকটি জায়গায় ডবল বার্থিং অর্থাৎ একই বার্থে পাশাপাশি দু’টি জাহাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে। বন্দরের ডক এরিয়ায় জাহাজ দাঁড়িয়ে থাকায় নতুন জাহাজ স্যান্ডহেড থেকে আসতে পারছে না। ফলে বন্দরে এদিন জাহাজ চলাচল ব্যাহত হয়।
বন্দরের সিটু নেতা বিমান মিস্ত্রি বলেন, করোনা আতঙ্কে বন্দরে অপারেশনের সঙ্গে যুক্ত অনেকে কাজ করতে চাইছেন না। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার(ট্রাফিক) অভয় মহাপাত্র বলেন, মেরিন পাইলটদের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেই বিষয়টি মিটে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। যেহেতু জাহাজ চলাচলের বিষয়টি জরুরি পরিষেবা, সেজন্য বন্দর অপারেশানের কাজ কোনওভাবেই বন্ধ রাখা যায় না।
এদিন করোনা সতর্কীকরণের জন্য পথে নামেন হলদিয়ার বিডিও তুলিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি সুব্রত হাজরা, সহ সভাপতি সইফুল ইসলাম ও সমবায় আধিকারিক। তাঁরা এদিন ব্রজলালচক মোড়ে প্রায় শতাধিক দোকান ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের যাতে কালোবাজারি না হয়, সেবিষয়ে সতর্ক করেন ব্যবসায়ীদের। কারণ ব্রজলালচকে আলু নিয়ে কলোবাজারির অভিযোগ ওঠে। বাজারে, ব্যাঙ্কে জমায়েত না করার জন্য কড়া সতর্কতা দেন তাঁরা। কিন্তু, প্রশাসনের নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই এদিন লকডাউন সত্ত্বেও ব্রজলালচক বাজারে বিকালেও ভিড় দেখা যায়।