পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এসব দেখে আগামী দিনে আরও ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে আধিকারিকরা এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রশাসনের দাবি, ভুয়ো আবেদনপত্র নিয়ে যেমন অনেকেই হাজির হচ্ছেন, তেমনই এই প্রকল্পে জেলার বহু বিবাহযোগ্য যুবতী উপকৃত হয়েছে। চলতি আর্থিক বর্ষে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৮৮০জন মহিলা ২৫ হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরও আরও কয়েকশো যুবতীর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, তার মাঝেই ভুয়ো আবেদনপত্র দেদার জমা পড়ায় আধিকারিকদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ভুয়ো আবেদনপত্র সামশেরগঞ্জ ব্লক থেকে জমা পড়েছে। এই ব্লকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ৭১৬টি ভুয়ো আবেদনপত্র জমা পড়েছে। সূতি-২ ব্লকে ৫২৬টি ভুয়ো আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। বড়ঞায় ১৩৭, বেলডাঙা-১ ব্লকে ৬২, বেলডাঙা-২ ব্লকে ১৭১টি ভুয়ো আবেদনপত্র পড়েছিল। বেলডাঙা শহরে দু’টি আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। বহরমপুরে ৬৮, বহরমপুরে শহরে একটি, ভগবানগোলা-১ ব্লকে ৫৯, ভগবানগোলা-২ ব্লকে ৪৩, ভরতপুর-১ ব্লকে দুই, ভরতপুর-২ ব্লকে দুই, ডোমকলে ১৪৮, হরিহরপাড়ায় ১৫, জলঙ্গিতে ৫, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভায় ৫, কান্দি ব্লকে ১০, লালগোলায় ৩১৬, নবগ্রামে ২১১, রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকে ২৪২টি আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে।
ধুলিয়ান পুরসভা ও ফরাক্কায় কোনও আবেদন বাতিল করা হয়নি। এক আধিকারিক বলেন, এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকেই একটি চক্রের পরামর্শে অনেকে ভুয়ো নথি তৈরি করে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। কেউ কেউ আবার বিয়ের কার্ডও ছাপিয়ে ফেলছে। এই প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে বিয়ের আগে উপযুক্ত প্রমাণসহ আবেদন করতে হবে। প্রথমবার বিয়ের জন্যই এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে। কেউ একাধিকবার বিয়ে করে আবেদন করলে সেটি গ্রহণ করা হবে না। পরিবারের বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকার মধ্যে হতে হবে। মেয়ের বয়স ১৮এর নীচে হলে সুবিধা মিলবে না। পাত্রের বয়স ২১ বছরের কম হওয়া চলবে না।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে একটি চক্র ফায়দা তুলছে। তারাই মূলত নকল বিয়ের কার্ড সহ অন্যান্য নথি তৈরি করছে। বিনিময়ে তারা কমিশন নিচ্ছে। কিন্তু, বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই আধিকারিকরাও নজরদারি বাড়িয়েছেন। কেউ রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদনপত্র জমা করলে আধিকারিকরা প্রয়োজনে সরকারি কর্মীদের এলাকায় পাঠিয়ে সত্যতা যাচাই করছেন। তবে রূপশ্রী প্রকল্প থেকে জেলার বহু পরিবার উপকৃত হয়েছে বলে আধিকারিকদের দাবি। এক সময় মেয়ের বিয়ের জন্য অনেক বাবাকেই অন্যের কাছে হাত পাততে হতো। সেটা এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকায় বিয়ের খরচ অনেকটাই উঠে আসছে। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মীনা বলেন, নিয়ম মেনে কেউ এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করলে তিনি সুবিধা পাবেন।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ডিসেম্বর মাসের পর থেকে রূপশ্রী প্রকল্পে বহু আবেদন পড়েছে। নথি ঠিক থাকলে বিয়ের আগেই কন্যার অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় ২৮ হাজার ২৮৬টি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। তারমধ্যে অধিকাংশই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে গিয়েছেন। শুধু আটকে গিয়েছে মাঝবয়সি বিবাহিত মহিলাদের আবেদনপত্র।
প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া এক যুবতীর বাবা বলেন, সরকার দুঃস্থদের কথা ভেবে এই প্রকল্পে সাহায্য করায় খুব উপকৃত হয়েছি। তবে প্রকল্পের সুবিধা নিতে বিবাহিতদের আবেদন করা ঠিক নয়।