পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
২৮বছরে পা দিয়েছে এগরা পুরসভা। এই মুহূর্তে ১৪টি ওয়ার্ড রয়েছে এই পুরসভা এলাকায়। ২০১৫সালে পুরভোটে তৃণমূল ন’টি, বিজেপি একটি, কংগ্রেস একটি, নির্দল একটি এবং সিপিএম দু’টি আসনে জয়ী হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বিজেপি, নির্দল ও এক সিপিএম কাউন্সিলার তৃণমূলে যোগ দেন। গত বছর লোকসভা ভোটে ১৪টির মধ্যে ১২টি ওয়ার্ড থেকেই লিড নেয় বিজেপি। তৃণমূল অনেকটা পিছিয়ে পড়ে। এই অবস্থা থেকে দলকে মজবুত করার লক্ষ্যে শহর সভাপতি পদে রদবদল করা হয়। স্বপন নায়েকের জায়গায় শহর সভাপতি করা হয় জয়ন্ত সাহুকে। তিনি সাংগঠনিক স্তরে বেশকিছু রদবদল করে দলকে শক্তিশালী করায় উদ্যোগী হন। তারমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে বুথভিত্তিক কমিটি, দু’জন করে পর্যবেক্ষক, শিক্ষক, ছাত্র-যুব, মহিলা, ব্রাহ্মণ, তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে সম্মেলন করা হয়। কিন্তু, দল তাতে কতখানি শক্তিশালী হয়েছে, সেটা আগামী পুরভোটে টের পাওয়া যাবে।
এই মুহূর্তে এগরার প্রধান সমস্যা হল নিকাশি। শহরের জল বেরনোর কোনও পথ নেই। যানজট সমস্যা আর একটি জ্বলন্ত সমস্যা। যান সমস্যা সমাধানের জন্য অবিলম্বে একটি বাইপাস করা প্রয়োজন। মহকুমা শহর সত্ত্বেও এখানে এসিজেএম কোর্ট এবং সহকারী আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের অফিস নেই। পাশাপাশি এগরা শহরে ছাত্র এবং ছাত্রীদের জন্য মাত্র দু’টি বিদ্যালয়। পড়ুয়ার সংখ্যা ৪০০০। শহরে একটি কো-এড স্কুলের দাবি দীর্ঘদিনের। এর বাইরে এগরা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল তৈরি হলেও সেখানে চিকিৎসক সংখ্যা অপ্রতুল। রোগীর ভিড় থাকায় চিকিৎসক সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিও আছে।
কেন্দ্রে মোদি সরকার এলে এগরায় বিপুল উন্নয়ন হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেদিনীপুর লোকসভা ভোটে প্রচার করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। এগরা বিধানসভার ভোটাররা তাঁকে বিপুল মার্জিনে জয়ী করেছেন। তারপর এক বছর হতে চলল। একজন সংসদ সদস্য এক বছরে সাতটি বিধানসভা এলাকায় উন্নয়নের জন্য ৫ কোটি টাকা পান। মেদিনীপুর লোকসভা এলাকায় উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যেই আড়াই কোটি টাকা এসেছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত এগরার উন্নয়নে কোনও টাকা আসেনি। এব্যাপারে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সংসদ সদস্য প্রতিনিধি তথা এগরার বিজেপি নেতা আশিস নন্দ বলেন, এগরা শহরের কংক্রিটের রাস্তা, কয়েকটি শ্মশানের সৌন্দর্যায়ন, নিকাশি, কিছু বিশ্রামাগার, সাব মার্সিবল পাম্প সহ বিভিন্ন কাজের জন্য বৃহস্পতিবার ১কোটি ২০লক্ষ টাকার প্রজেক্ট জেলাশাসকের অফিসে জমা করা হয়েছে। এগরার গ্রামীণ এলাকায় আরও অন্তত ৪০-৪৫লক্ষ টাকার প্রজেক্ট জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা লোকসভা ভোটে এগরা শহরে যে রেজাল্ট করেছি, পুরভোটে তার চেয়েও ভালো ফল হবে। আবাস যোজনা প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ টাকার কাটমানি খেয়েছেন কিছু তৃণমূল নেতা। মানুষ তার জন্য জবাব দিতে তৈরি। পুরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর বেরা বলেন, এখনও অবধি মেদিনীপুরের সংসদ সদস্য এগরার উন্নয়নে কানাকড়ি দেননি। এগরার উন্নয়নে তিনি কতটা আন্তরিক, এই ঘটনা থেকেই তা স্পষ্ট।
এগরা শহরের ৬নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পেশায় বিমাকর্মী অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, এগরা শহরে প্রত্যাশামতো উন্নয়ন হয়নি। নিকাশি সমস্যা সমাধানে মাস্টার প্ল্যান নেওয়া দরকার। বিজেপিও অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু, তা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। যুব তৃণমূল নেতা উদয় পাল বলেন, লোকসভা ভোটে মোদিকে দেখে ভোট হয়েছিল। পুরভোটে অন্যরকম ফল হবে। এখানে লোকসভা ভোটের কোনও প্রভাব পড়বে না। এগরার সিপিএম নেতা সুব্রত পণ্ডা বলেন, পুরভোটে আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। সেই কাজ অনেকটাই এগিয়েছে।