গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকরতলার হজরতপুর এলাকায় বুধবার বিকেলে একটি গাড়ির মালিকপক্ষের সঙ্গে চালকের গণ্ডগোল হয়। সেই গণ্ডগোল বিকেলে মিটে গেলেও পরে তার রেশ গিয়ে পড়ে ওই গ্রামে। বাসিন্দাদের দাবি, হঠাৎ রাত ৯টা নাগাদ বোমাবাজি শুরু হয়। গ্রামের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি করে একদল দুষ্কৃতী। বিভিন্ন বাড়ির দেওয়ালে সেইসব বোমার বারুদের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে গ্রামে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। সেখানে ভোজ খেয়ে ফিরছিলেন তপন রুইদাস। বোমাবাজি চলার সময় তপনবাবু মাঝে পড়ে যান। তার জেরে বোমা গিয়ে লাগে তপনবাবুর গায়ে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বাড়ি থেকে সামান্য দূরেই তাঁর মৃতদেহ পড়েছিল। তখন বাড়িতেই ছিলেন তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যরা।
পরে ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পুলিস যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে পরিবার।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তপনবাবু রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী সহ এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বৃদ্ধা মাও রয়েছেন। ওই রাতেই কাঁকরতলা থানার পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে খয়রাশোল থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে গিয়ে জমায়েত করেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, হজরতপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণ দাস সাহাপুরের লখাই পাল ও মানস পালের গাড়ি চালাত। ওই চালককে বুধবার দুপুরে গাড়ি খারাপ হওয়ার কারণে মারধর করা হয়। সেই ঘটনার জেরে হজরতপুরের দাসপাড়ার কয়েকজন মালিকপক্ষের একজনকে মারধর করে। সেই ঘটনার জেরে মালিকপক্ষ আবার রাতে কিছু দুষ্কৃতী নিয়ে বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। সেই সময় বোমাবাজির মাঝে পড়ে নিরীহ গ্রামবাসী তপন রুইদাসের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিসের দাবি, এই ঘটনার জেরে ওই চালক ও মালিকপক্ষের লোকেরা পলাতক রয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে। তবে, ঘটনার পর সেখান থেকে অভিযান চালিয়ে ১৬টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আটজনকে আটক করা হয়েছে। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিন মৃতদেহ সিউড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
ময়নাতদন্তের পর দেহ গ্রামে ফিরলে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। গ্রামে নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ালেও পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। এদিন বিকেলেই মৃতদেহের সৎকার করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় রুইদাস বলেন, তপনবাবু ঝামেলার মধ্যে ছিলেন না। তিনি কিছুই জানতেন না। গ্রামে বোমাবাজি করার সময় তিনি মাঝে পড়ে যান। বোমার আঘাত তাঁর কানের কাছে লাগে। ওই পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
প্রসঙ্গত, কাঁকরতলা এলাকার পাশাপাশি বীরভূম জেলার বিভিন্ন এলাকাতেই বোমার রমরমা চলছে। গত বুধবার সকালে বোলপুরের সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েতের কার্যালয়, দলীয় অফিসের সামনে প্রচুর বোমা পড়ে থাকতে দেখা যায়।