পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তাপসবাবু বলেন, এলাকাটি আমার বিধানসভা ক্ষেত্রের মধ্যে। কয়েক মাস আগে ওদের বিদ্যুৎ কেটে দেয় ইসিএল। আমি তখন ওদের কাছে দরবার করেছিলাম, যেন পরীক্ষার মরশুম পর্যন্ত বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। আমরাও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। কিন্তু, আমার আবেদনে ইসিএল কান দিচ্ছে না।
আসানসোলের মেয়র তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, ওই এলাকার বহু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী চূড়ান্ত সমস্যা পড়েছে। সামনেই উচ্চ মাধ্যমিক রয়েছে। আমাদের বিধায়ক অনুরোধ করা সত্ত্বেও ইসিএল পদক্ষেপ নেয়নি। এবার এলাকার আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হলে ইসিএল দায়ী থাকবে। যদিও এনিয়ে ইসিএলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সিএমডির কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়কে এনিয়ে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ করলেও উত্তর মেলেনি।
২ নম্বর জাতীয় সড়কের অদূরে রানিগঞ্জ ব্লকের জেমারি পঞ্চায়েতের মধ্যে পাশাপাশি রয়েছে ময়রাবাঁধ, ওল্ড মাইনাস ও জেমারি গ্রাম। কোলিয়ারি লাগোয়া এই গ্রামগুলি পুরোপুরি ইসিএলের উপরই নির্ভরশীল। এতদিন এই এলাকার বাড়িগুলিতে ইসিএলই বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হতো। অভিযোগ, কয়েক মাস আগেই ইসিএলে কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে। ময়রাবাঁধ, ওল্ড মাইনাস গ্রাম সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জেমারি গ্রামের একাংশের বিদ্যুৎ কেটে দেওয়া হয়। সামনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় গ্রামের বাসিন্দারা ইসিএলের দ্বারস্থ হওয়ার পাশাপাশি বিধায়ককেও জানান। এমনকী এলাকার তৃণমূলের যুব নেতা পঙ্কজ যাদব বিষয়টি ফোনে দলের জেলা পর্যবেক্ষক কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরীকেও জানান বলে দাবি। বিধায়ক বিষয়টি নিয়ে ইসিএলের কাছে দরবার করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার প্রস্তুতি অথৈ জলে চলে যায় পরীক্ষার্থীদের।
এলাকায় গিয়ে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় বাস করা ইসিএলের কর্মীরা বাদ দিয়ে সকলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০০টি বাড়ির বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। ওই এলাকায় এবার প্রায় ৫০ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় তারা ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে। দিনের আলো থাকতে থাকতেই বেশিরভাগ প্রস্তুতি সেরে নিতে হচ্ছে তাদের। পরে ইমার্জেন্সি লাইট পাশের গ্রাম থেকে চার্জ করে নিয়ে এসে পড়তে হচ্ছে। কারও বাড়িতে সেই অবস্থাও নেই। জেকে নগর হাইস্কুলের পড়ুয়াদের সিট পড়েছে বোগরা বিবেকানন্দ হাইস্কুলে। পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে পরীক্ষার্থী অঞ্জলি মাড্ডি, অনু যাদব বলে, আমাদের খুবই সমস্যা হচ্ছে। কখনও লোকের বাড়ি থেকে লাইট চার্জ করে আনতে হচ্ছে। এমনকী চার্জ শেষ হয়ে গেলে আর পড়াশোনা উপায় নেই। অভিভাবক মঙ্গলি মাড্ডি, উজিত বিন্দ বলে, আমাদের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিল ইসিএল।
যুব নেতা চন্দ্রনাথ সাহানা, সঞ্জিত মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা বিষয়টি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনছি। এদিকে, বিদ্যুৎ কাটা হয়েছে জেকে নগর হাইস্কুল পাড়াতেও। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পাশেই ইসিএলের অফিসার্স কলোনিতে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। অথচ আমাদের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ৪০ বছর ধরে এই এলাকার বিদ্যুৎ ও জল ইসিএলই দিয়ে আসছে। ওই পাড়ার বাসিন্দা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার আচার্য বলেন, আমাদের এখানে প্রায় ৫০টি বাড়ির বিদ্যুৎ কেটে দিয়েছে। বিষয়টি যথেষ্ট অসম্মানের। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা চরম সমস্যায় পড়েছে।