সংবাদদাতা, তেহট্ট: হাত পা দুই অঙ্গই প্যারালিসিসে আক্রান্ত। তবু মনের জেদ নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে পলাশীপাড়া থানার বার্নিয়া শ্রীকৃষ্ণপুরের প্রকাশ বিশ্বাস। হাঁসপুকুরিয়া বিদ্যাপীঠের একটি ঘরে রাইটার নিয়ে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে প্রকাশ। প্রকাশের বাবা পবনকুমার বিশ্বাস বলেন, ওর যখন তিনদিন বয়স, তখন হাত পা নীল হয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়েছি। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তিনদিনের শিশু সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে। সেই সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন হাত, পা, সব অবশ হয়ে গিয়ে হাঁটা চলা ও কথা বলতে পারবে না। ন’মাস পর্যন্ত ওই অবস্থা ছিল। পরে চিকিৎসায় আস্তে আস্তে কথা বলতে পারলেও হাঁটাচলা করতে পারে না। এবার ও মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে রাইটার নিয়ে। শোয়া বা বসা কিছুই একা করতে পারে না। সবটাই ওকে করে দিতে হয়। পরীক্ষাকেন্দ্রে অসুবিধা হলেও মনের জোরে টানা তিন ঘণ্টা বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে। এত কষ্টের মধ্যেও ছেলের পড়াশোনার আগ্রহ দেখে শিক্ষকরা তাকে সবরকম সাহায্য করেছেন। হাতে লিখতে কষ্ট হয় বলে তার স্কুলের শিক্ষকরা কাউন্সিলের অনুমতি নিয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রকে রাইটার নেওয়া হয়েছে।
তার মা রেখাদেবী বলেন, ছেলেকে সুস্থ করার সব চেষ্টা আমরা করেছি। চিকিৎসার জন্য বহু অর্থ ব্যয় করেও তাকে সুস্থ করতে পারিনি। প্রকাশ বলে, বাংলা, ইংরাজি, ভূগোল নিয়ে প্রথম তিনটি পরীক্ষাই ভালো হয়েছে। নবম শ্রেণী থেকে বাড়িতে আমার মা ও বাবা আমাকে সব বিষয়েই পড়িয়েছেন। আমাকে বোর্ড থেকে ৪৫ মিনিট বেশি সময় দিলেও আমার লাগছে না। আমি তিন ঘণ্টায় পরীক্ষা শেষ করে দিচ্ছি। বড় হয়ে দাদুর মতো শিক্ষক হতে চাই।