গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
বীরভূম জেলায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এই প্রথম নয়। এর আগে জেলা মিটিংয়ে কার্যকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছে। গতবছর মে মাসে প্রকাশ্যে রামপুরহাটের কামারপট্টি মোড়ে কিষাণ মোর্চার জেলা সভাপতি সোমনাথ ঘোষ ও মাদার পার্টির রামপুরহাট শহর সভাপতি নীলকণ্ঠ বিশ্বাসের মধ্যে মারামারি হয়। পুলিস তাঁদের গ্রেপ্তারও করে। পার্টি অফিসের চাবি নিয়ে সেই অশান্তি হয়। বুধবারও একই কারণে এই দুই নেতার দ্বন্দ্বে পোস্টার পড়ার পাশাপাশি পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল। যার জেরে পুরভোটের মুখে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় সোমনাথ ঘোষ সাংগঠনিক বৈঠক ডাকেন। তাঁর দাবি, মিটিংয়ের কথা আগাম জানানো সত্ত্বেও পার্টি অফিস তালা দিয়ে রাখা হয়। পরে চাবি চেয়েও তিনি না পেয়ে একটি লজে বৈঠক করেন।
এদিকে দুপুরে দলের অন্যান্য কর্মীরা চাবি নিয়ে পার্টি অফিস খুলতে এসে দেখেন গেটে অন্য একটি তালা মারা ও দেওয়ালে পোস্টার সাঁটানো। সাদা কাগজের উপর লাল কালিতে পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল এসে মিটমাট না করলে দায়ী থাকবে নীলকন্ঠ বিশ্বাস। তালা ভেঙে পার্টি অফিস খুললে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। স্বভাবতই দলের এই দুই নেতার দ্বন্দ্ব ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
নীলকন্ঠবাবু বলেন, সকালে পার্টি অফিস তালা বন্ধ থাকে। এদিনও তাই ছিল। মঙ্গলবার ওদের পার্টি অফিসের চাবি নেওয়ার কথা থাকলেও নেয়নি। আর চাবি থাকে শহরের দুই সাধারণ সম্পাদকের কাছে। এক কার্যকর্তার আত্মীয় মারা যাওয়ায় তাঁরা তারাপীঠ শ্মশানে রয়েছেন। সেকারণে তাঁদের চাবি পৌঁছতে দেরি হয়। এনিয়ে কারও অশান্তি করার ইচ্ছা থাকলে আমার কিছু করার নেই। তিনি বলেন, সোমনাথ দলের ভালো চান না। এর আগেও তিনি অশান্তি করেছিলেন। এবারও তিনি বিশঙ্খৃলা সৃষ্টি করলেন। এতে আখেরে দলেরই ক্ষতি হচ্ছে।
সোমনাথবাবু বলেন, মিটিংয়ের বিষয়টি আগেই মাদার পার্টির শহর সভাপতিকে সূচনা দেওয়া হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ে এসে দেখি পার্টি অফিসের তালা বন্ধ। আধঘণ্টা অপেক্ষা করার পর বিষয়টি জেলা সভাপতিকে ফোন করে জানিয়ে সমস্যার সমাধান করার জন্য বলি। তবে, পার্টি অফিসে তালা মারা ও পোস্টার সাঁটানোর কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।
যদিও জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, কিষাণ মোর্চার জেলা সভাপতি পার্টি অফিসে মিটিং ডেকেছিলেন। কিন্তু, একজন মারা যাওয়ায় পার্টি অফিসের চাবি পৌঁছতে দেরি হয়েছে। আমি বলেছিলাম একটু যোগাযোগ করে চাবি চেয়ে নিন। ওঁরা ভেবেছে ইচ্ছা করে চাবি দিল না। এনিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে, কিষাণ মোর্চার জেলা সভাপতি তালা দিয়ে ঠিক করেননি। জেলা নেতৃত্বকে পাঠিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে গেরুয়া শিবিরের এই দ্বন্দ্ব জানাজানি হতেই রাজনৈতিক সমালোচনাও শুরু হয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই ঘটনায় বিজেপি যে ক্ষীয়মাণ শক্তি তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এতে মানুষ আনন্দিতই হবে।