দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
এই ব্যাপারে বীরভূমের পুলিস সুপার শ্যাম সিং বলেন, বোলপুরে তিনটি বোমা ছিল। বাকিগুলি নকল। সেগুলিতে কাগজ, পাথর দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছে তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। আতঙ্ক ছড়াতে নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্যে এই কাজ করা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েতের সিয়ান গ্রামে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বোমা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তার পাশেই রয়েছে সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েত কার্যালয়। সেখানেও বোমা রাখা থাকে। এছাড়া একটি ব্যাঙ্কের সামনে থেকেও বেশকিছু বোমা উদ্ধার হয়। এদিন ভোরে স্থানীয় বাসিন্দারা সেই বোমা দেখতে পেয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বোলপুর-নানুর রাস্তায় চলাচল করা নিয়েও অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে অবশ্য পুলিস এসে ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে। সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা এসে প্রায় ৪০টির মতো বোমা উদ্ধার করেন। তারপর গ্রামের প্রান্তে একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু করা হয়। তাজা বোমাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করা গেলেও বাকিগুলির ক্ষেত্রে অবশ্য উল্টো ছবি দেখা যায়। ফেটে যাওয়ার পর দেখা যায় তাতে মাটি, পাথর, কাগজ প্রভৃতি সামগ্রী ভরা রয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অধিকাংশ বোমার মধ্যে কোনও বারুদই ছিল না। পাথর, মাটি, আবির প্রভৃতি দিয়ে বোমাগুলি বাঁধা ছিল। তবে, সুতলির নিপুণ বাঁধুনির জেরে বাইরে থেকে তা দেখে বোঝা মুশকিল। ফলে, আতঙ্ক ছড়াতেই এই কাজ করা হয়েছে বলে পুলিসের একাংশ মনে করছে।
অনেকেই বলছেন, পুরসভা ভোটের এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তার আগেই এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করতে অভিনব পদ্ধতিতে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে। তিনটি বোমা তাজা থাকলেও বাকি বোমাগুলি ছিল নকল। ফলে, নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের এহেন কাজে হতবাক হয়েছেন পুলিসের কর্তারাও।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন ২০-২২জন কর্মী-সমর্থক। তারপর প্রত্যেকেই নিজের বাড়ি চলে যান। কিন্তু, এদিন ভোরে কার্যালয়ের সামনে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা কার্যত তাজ্জব বনে যান।
সিয়ান-মুলুক অঞ্চলের তৃণমূল নেতা সাদরেল আলা বলেন, পঞ্চায়েতের আবাস যোজনায় কিছু বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। তা নিয়েই দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা করা হচ্ছিল। তারপর প্রত্যেকেই বাড়ি ফিরে যাই। এদিন ভোরে বোমা পড়ে থাকার খবর জানতে পারি। তাঁর দাবি, ওই রাতে দলীয় কার্যালয়ের পাশাপাশি পঞ্চায়েত অফিস ও একটি ব্যাঙ্কের সামনেও বোমা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। রাতে দলীয় কার্যালয়ে একটি বোমা ফাটানো হয়েছে। তার ফলে জানালার কাচ ভেঙে গিয়েছে।
সাদরেল সাহেব বলেন, এলাকায় বিজেপির সেভাবে কোনও সংগঠন নেই। যে কয়েকজন ছিলেন তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সেই রাগেই হয়তো বিজেপি কাউকে দিয়ে বোমা রাখা করিয়েছে। ঘটনার কথা পুলিসের পাশাপাশি জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তবে, নকল বোমা নিয়ে কিছু জানা নেই।
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল অবশ্য বলেন, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বীরভূমে বহু বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। ফলে, সবকিছুতেই বিজেপির নাম জুড়ে দিলে আমরা মানব না। এক্ষেত্রে এক গোষ্ঠীর সঙ্গে অপর গোষ্ঠীর বিবাদের জেরেই বোলপুরে এই ঘটনা ঘটেছে।