বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক মানস মণ্ডল বলেন, ওই এলাকায় প্রায় ১৪একর জমি রয়েছে। কিন্তু, ডাম্পিং গ্রাউন্ড করার জন্য মাত্র এক একর জমির প্রয়োজন। তাছাড়া উঁচু পাঁচিল সহ সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক উপায়ে ময়লা ব্যবস্থাপনা করা হবে। তাতে কোনওরকম দূষণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে না। সেটা গ্রামবাসীরা বুঝতে চাইছেন না। এদিন প্রস্তাবিত এলাকায় আমাদের কর্মীরা টিন দিয়ে ব্যারিকেড করছিলেন। গ্রামবাসীরা তা জোর করে ভেঙে দেন। পুলিস বাধা দিলে উত্তেজিত জনতা পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। তাতে ছ’জন পুলিস কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁরা স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পুলিসের একটি গাড়ির কাচও ভেঙে দেয়। শেষমেশ উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষ্ণুপুরে ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকায় ময়লা ফেলার সমস্যা দীর্ঘদিনের। দশকের পর দশক ধরে শহরের নানা জায়গায় ময়লা ফেলা হচ্ছে। তা নিয়ে নাগরিকরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। আগে নিকাশি নালা, পরিখা, বাঁধের পাড় ইত্যাদি জায়গায় ময়লা ফেলা চলছিল। তাতে অধিকাংশ জায়গাতেই বাসিন্দাদের তরফ থেকে আপত্তি ওঠে। শেষ পর্যন্ত শহরের কাছে ময়রাপুকুর মৌজায় একটি খাস জমি চিহ্নিত করা হয়। তিনবছর আগে সেখানে ময়লা ফেলতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার কারণে পুরসভা পিছু হটে। এদিন একইভাবে এসডিও এবং এসডিপিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিস বাহিনী ওই জমির দখল নেওয়ার জন্য যান। বেড়া দেওয়ার জন্য বাঁশ ও টিন নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সঙ্গে ময়লাবোঝাই প্রায় ১০টি গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সেই খবর পেয়ে স্থানীয় ময়রাপুকুর, পানশিউলি, বাঁধগাবা, শিরোমণিপুর, ঘুটবন প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা একজোট হয়ে প্রতিবাদে শামিল হন। বিকেলের দিকে পুলিসের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের খণ্ডযুদ্ধ হয়। তাতে ছ’জন পুলিস কর্মী ও পাঁচজন বাসিন্দা জখম হন। পুলিসের একটি গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়।
স্থানীয়বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিস অন্যায়ভাবে লাঠিচার্জ করায় দু’জন মহিলা সহ পাঁচজন জখম হয়েছেন। এরপর আশেপাশের গ্রামের প্রচুর লোক জড়ো হয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
ময়রাপুকুর গ্রামের বাসিন্দা গঙ্গাধর লোহার বলেন, যে জায়গায় ময়লা ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে ফুটবল মাঠ রয়েছে। গ্রামের ছেলেরা খেলাধুলো করে। তাছাড়া জমির একাংশে আগে তসর চাষ করা হতো। এখনও প্রচুর অর্জুন গাছ রয়েছে। আগামী দিনে সেখানে আবারও তসর চাষ করা হবে। তাই আমরা ওই জমিতে ময়লা ফেলতে দেব না।
অপর বাসিন্দা সুভাষ লোহার বলেন, প্রস্তাবিত জমির পাশের রাস্তা দিয়ে এলাকার ৬-৭টি গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা বিষ্ণুপুরে স্কুল ও কলেজে যায়। ডাম্পিং গ্রাউন্ড হলে এলাকায় দূষণ ছড়াবে। তাই আমরা কিছুতেই শহরের ময়লা এখানে ফেলতে দেব না।