পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিমা সাউ নামে ওই গৃহবধূর বাড়ি রামনগরের সাদিকপুর গ্রামে। তাঁরা বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতার কসবার বাসিন্দা। গত কয়েকদিন আগে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাপেরবাড়ি রামনগরের অশ্বস্থপুরা গ্রামে আসেন প্রতিমাদেবী। শনিবার প্রসবযন্ত্রণা ওঠায় রামনগর বাজারে অবস্থিত একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করেন বাপেরবাড়ির লোকজন। রবিবার তিনি সেই নার্সিংহোমেই সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
শিশুটির বাড়ির লোকজন ও তার পরিজনদের অভিযোগ, এরপর প্রায় তিনদিন কেটে গেলেও সদ্যোজাত শিশুপুত্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সেবা শুশ্রুষার কোনও ব্যবস্থাই করেনি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক এসে শিশুটির চিকিৎসা করার কথা ছিল। এব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও কোনও কাজ হয়নি। বরং প্রতিবারই শিশুটির কোনও অসুবিধা হবে না বলে আশ্বাস দিয়ে গিয়েছে তারা। কিন্তু কোনও চিকিৎসা করানো হয়নি। কার্যত তাকে ফেলে রাখা হয়। এভাবেই ক্রমশ শিশুটির অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপর মঙ্গলবার সকালে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এই খবর জানাজানি হওয়ার পর বাড়ির লোকজন থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাফিলতি সহ নানা অভিযোগ তুলে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এই বিক্ষোভে যোগ দেন গৃহবধূর বাপেরবাড়ির লোকজনও। এভাবে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এই সময় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানায়, যেটুকু চিকিৎসা করার তা করা হয়েছে। কোনও গাফিলতি হয়নি। যে কোনও কারণেই হোক শিশুটি মারা যেতে পারে। এনিয়েই বচসা বেধে যায়। উত্তেজনা ক্রমশ বাড়তে থাকলে পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজনকে নিয়ে আলোচনায় বসে পুলিস। তাঁদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শেষমেশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে পুলিস। এরপরই বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন।
কান্নায় ভেঙে পড়ে প্রতিমার স্বামী পিন্টু সাউ বলেন, কোনও চিকিৎসা ছাড়াই মৃত্যু হল আমার ছেলের। বারবার বলার পরও বাচ্চার চিকিৎসা করানো হয়নি। চিকিৎসক একটু নজর দিলে ছেলেকে এইভাবে হারাতে হতো না। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ শিশুটির চিকিৎসা করাতে অপারগ বলে জানালে আমরা অন্যত্র নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতাম। আমরা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করব। এই গাফিলতির সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। তাছাড়া আমরা চাই, এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হোক।
এদিকে এপ্রসঙ্গে রামনগর থানার এক পুলিস আধিকারিক বলেন, এই ঘটনা সম্পর্কে সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঠিক কী কারণে শিশুটির মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে তা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত শিশুটির দেহ ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত হলে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হয়ে যাবে। ঘটনার তদন্ত চলছে।