বিএনএ, বাঁকুড়া: শহরবাসীকে আরও ভালো পরিষেবা দিতে অনলাইনে ট্যাক্স, প্ল্যান ও ট্রেড লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে বাঁকুড়া পুরসভা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ এই ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা করছে পুরসভা। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে পুরসভা। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে তিনটি ব্যবস্থা চালু হলেও পরবর্তী সময়ে অনলাইনে মিউটেশন, অনুষ্ঠানের জন্য জলের গাড়ি, জঞ্জালের গাড়ি, নতুন জলের সংযোগ, সেফটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার বুকিং সহ সমস্ত পরিষেবা অনলাইনে চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। এছাড়াও অনলাইনে আয় ও পরিচিতির শংসাপত্র পরবর্তী ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে। পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দারা।
বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, শহরের বাসিন্দাদের হয়রানি কমাতে আমরা অনলাইনের মাধ্যমে ট্যাক্স জমা, বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন, নতুন ট্রেড লাইসেন্স ও তার নবীকরণের ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিচ্ছি। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই আমরা প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছি। পরবর্তী পর্যায়ে ধাপে ধাপে বাকি পরিষেবাগুলি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই ব্যবস্থা চালু হলে শহরবাসী দারুণভাবে উপকৃত হবেন।
বাঁকুড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার পরিবার বসবাস করে। ধাপে ধাপে সমস্ত বাড়ি ও জমির মাপ সংক্রান্ত তথ্য ভূমি দপ্তরের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তা পুর ও নগর উন্নয়ন এবং ভূমি দপ্তরের তথ্য একটি সার্ভারে আপলোড করা হচ্ছে। ওই সার্ভার থেকে যে কোনও হোল্ডিং সম্পর্কে সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে। তবে হোল্ডিং সংক্রান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রতিটি হোল্ডিংয়ের সঙ্গে মোবাইল নম্বর বা ইমেল আইডি রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। পুরসভার দাবি, কোনও ব্যক্তি যে হোল্ডিং নম্বরের জন্য কর প্রদান করবেন, তা সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির মালিকের কাছে পৌঁছে যাবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, www.holdinggtax.co.in সাইটে গিয়ে প্রথমে জেলা, পুরসভার নাম, ওয়ার্ড নম্বর বাছাই করতে হবে। এরপর প্রপাটি ট্যাক্স সিলেক্ট করতে হবে। ওয়ার্ড নম্বর ও হোল্ডিং নম্বরটি সার্চ করে যে কোনও ব্যক্তি পুরসভার যে কোনও জায়গা থেকেই তাঁর বকেয়া পুরকর, প্রদেয় করের পরিমাণ, সুদ অথবা ছাড়ের অঙ্ক সহজে দেখতে পারবেন। এরপর অনলাইনে পেমেন্ট করা যাবে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে বসে নিজের অত্যাধুনিক মোবাইল ফোন থেকে অনলাইনে পুরকর প্রদান করতে পারবেন। এরপর প্রথা মেনে অনলাইনে অর্থ প্রদানের কয়েক মিনিট পরেই অর্থ প্রদানকারী ব্যক্তি প্রমাণ হিসেবে ডিজিটাল রসিদ ও এসএমএস পাবেন। শহরবাসীকে এই ব্যবস্থার সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার জন্য মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের দিক থেকে ট্রায়াল রান শুরু করবে পুরসভা।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপ আগরওয়াল বলেন, শহরের বাসিন্দারা অনলাইন ব্যবস্থার সঙ্গে সড়োগড়ো না হওয়া পর্যন্ত অনলাইনের পাশাপাশি পুরসভা ও কর আদায়কারীদের মাধ্যমেও পুরকর প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে।
এবিষয়ে স্কুল ডাঙার বাসিন্দা শুভদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, পুরকর জমা দেওয়ার জন্য পুরসভায় গিয়ে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনলাইন ব্যবস্থা চালু হলে বহু মানুষ এই হয়রানির হাত থেকে মুক্তি পাবেন।