বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এ ব্যাপারে বীরভূমের আরটিও মৃন্ময় মজুমদার বলেন, এদিন সিউড়িতে ১৩টি পুলকারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সেরকম কোনও সমস্যা পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক নির্দেশ কিছু দেওয়া হয়েছে। জেলায় সার্বিকভাবে ছাত্রছাত্রী বহনকারী গাড়িগুলির অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে মাঝেমাঝেই আমরা এই ধরনের অভিযান চালাব। এদিন রামপুরহাটেও সতর্ক করা হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পরিবহণদপ্তর ও পুলিসের আধিকারিকরা ওই ইংরেজি মাধ্যম বেসরকারি স্কুলে যান। সেখানে স্কুল চত্বরে থাকা পুলকারগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেন। পুলকারগুলিতে হর্ন, টায়ার, আলো, ইন্ডিকেটর প্রভৃতি চেকিং করে দেখে। এছাড়া গাড়িগুলিকে চালিয়েও দেখাতে বলা হয়। সেক্ষেত্রে গাড়িরগুলির ব্রেক পরীক্ষা করেন আধিকারিকরা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িগুলির যন্ত্রাংশ পরীক্ষাও করে দেখা হয়েছে। গাড়ির কাচে চিড় ফাট থাকায় স্টিকার লাগানো হয়েছিল। সেইসব স্টিকার তুলে কাচ পাল্টানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের জন্য পুলকারে সিট বেল্ট লাগানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, কয়েকটি পুলকারে ফাস্ট এড বক্স ছিল না। আবার কোনওটিতে ফাস্ট এড বস্কে থাকা ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিন ওই স্কুলে ১৩টি গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হয়। এছাড়া চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির নথি চেকিং করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পুলকারগুলির নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। বড়সড় কোনও সমস্যা নেই। প্রশাসনের তরফে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরা সেইমতো ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিছু যন্ত্রাংশ ব্যবহারের জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, এদিন রামপুরহাটের কালীডাঙা এলাকায় একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পুলকারে অভিযান চালায় দপ্তর। সেখানে ছাত্রছাত্রী বহনকারী গাড়িগুলির চালককে সতর্ক করা হয়েছে।
পরিবহণদপ্তরের দাবি, গাড়ির চালক ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে সচেতন করতেই জেলাজুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। তাই গাড়ির চালকদের সব ধরনের নিয়ম সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বীরভূমেও বিপজ্জনকভাবে কিছু গাড়িতে পড়ুয়া বহন করার অভিযোগ রয়েছে। লাইসেন্স বিহীন গাড়িতে করেও কচিকাচাদের নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেক্ষত্রে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কে দায় নেবে? অভিভাবকরা অনেক সময় সেইসব গাড়ির জন্য উদ্বিগ্ন হয়েও থাকেন। তাছাড়া রান্নার গ্যাসে গাড়ি চালানোর অভিযোগও রয়েছে। মাস খানেক আগে রামপুরহাটের মহকুমা শাসক ওই ধরনের পুলকার হাতেনাতে ধরে চালককে সতর্ক করেন। অভিভাবকদের দাবি, এদিন প্রশাসন অভিযান চালালেও ভবিষ্যতে তা আর করা হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাছাড়া এর আগে এই ধরনের উদ্যোগ দেখা যায়নি।
যদিও পরিবহণদপ্তরের দাবি, জেলায় পুলকার নিয়ে বড়সড় কোনও সমস্যা নেই। তবু নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এব্যাপারে নজরদারি করা হবে। সম্প্রতি জেলাশাসক পরিবহণ দপ্তরের সঙ্গে একটি বৈঠক করে এই ধরনের গাড়িগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেন। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা দাবি করেন, গাড়িগুলিতে একসঙ্গে অনেক শিশু স্কুলে যায়। তাছাড়া রান্নার গ্যাসের সাহায্যেও অনেক পুলকার চলাচল করে। সেইসব গাড়িগুলির হাল হকিকত জানতেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিবহণদপ্তরের দাবি, হুগলির পোলবার ঘটনার জেরে নয়, তার আগে থেকেই জেলায় পুলকারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই সেই সিদ্ধান্ত মতো এদিন থেকে জেলার কিছু জায়গায় অভিযান চালানো হয়। তবে, এদিন সিউড়ি ও রামপুরহাটে পুলকারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলেও জেলার অন্য কোথাও অভিযান চালানো হয়নি বলে পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।