পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
মুর্শিদাবাদের পুলিস সুপার অজিত সিং যাদব বলেন, স্টেনগানটি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। সেটি কোথা থেকে আনা হয়েছিল, তা ধৃতদের জেরা করে জানা হবে। তাদের কাছে স্টেনগান ছাড়াও সাতটি সেভেন এমএম, একটি মাসকেট এবং ৮৫রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে।
ধৃতদের মধ্যে দু’জন মালদহের কালিয়াচকের অস্ত্র কারবারি। কালিয়াচকের কোরালি চাঁদপুরের সালাম শেখ এবং ওই গ্রামেরই বাসিন্দা নূর মহম্মদ জলঙ্গির দু’জনকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করার জন্য এসেছিল। পুলিস সিলু শেখ এবং হাসিবুল ইসলাম নামে ওই দু’জনকেও গ্রেপ্তার করেছে। সিলুর বাড়ি জলঙ্গির কোলকেহারা এবং হাসিবুলের বাড়ি ডোমকলের জিৎপুর নতুনপাড়া। ওই দু’জন অন্য আরেকজনকে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। পুলিস তার আগেই তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে বেআইনি অস্ত্রের ঝনঝনানি বহুদিন ধরেই শোনা যায়। কিন্তু, আগে স্টেনগান খুব কমই উদ্ধার হয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে দু’ধরনের স্টেনগান তৈরি হয়। এক ধরনের স্টেনগান থেকে পরপর ২৭টি গুলি বের হয়। অন্য আরেক ধরনের স্টেনগান থেকে পরপর ৩৬টি গুলি বের হয়। এধরনের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বহু দূর থেকে খতম করা যায়। রাজ্যে এর আগে আসানসোলের এক লোহা মাফিয়ার কাছে থেকে এধরনের একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। এছাড়া চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের আরেক দুষ্কৃতীর কাছে থেকে স্টেনগান উদ্ধার হয়েছিল। তবে ওই দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে পরপর ২৭টি গুলি বের হয়। কিন্তু, মুর্শিদাবাদে উদ্ধার হওয়া স্টেনগান থেকে পরপর ৩৬টি গুলি বের হয়। এধরনের আগ্নেয়াস্ত্র দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকা দামে বিক্রি হয়।
এদিকে মুর্শিদাবাদে প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত হওয়ায় গণ্ডগোলের আশঙ্কা বাড়ছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করার পিছনে অন্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সেসব তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দেড় মাসের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় ৫৭টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তারমধ্যে নাইন এমএম এবং সেভেন এমএম জাতীয় পিস্তলই বেশি রয়েছে। এছাড়া ৬৮৯রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে।
কয়েক দিন আগে বহরমপুরে এক মহিলার কাছে থেকে প্রচুর পরিমাণ গুলি উদ্ধার হয়েছে। তাকে সহ দেড় মাসের মধ্যে ৭০জন অস্ত্র কারবারিকে পুলিস বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার হওয়া সব ধরনের পিস্তল এসেছিল মুঙ্গের থেকে। সেখানকার বেশ কয়েকটি বেআইনি কারখানায় স্টেনগান তৈরি হচ্ছে। সাধারণ দুষ্কৃতীদের হাতেও এই ধরনের আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দেদার চলে গেলে আগামীদিনে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ারও আশঙ্কা করছেন অনেকেই। জেলায় বেআইনি অস্ত্র মজুত হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশেও মুঙ্গেরে তৈরি পিস্তলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে অনেক আগ্নেয়াস্ত্র বাংলাদেশেও চলে যাচ্ছে। সেখানে তা প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, জেলায় এর আগেও একটি স্টেনগান উদ্ধার হয়েছিল। তবে সেটি এত উন্নতমানের ছিল না। ইসলামপুর থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়েছে। মুঙ্গেরের ‘কারিগর’ ছাড়া তা অন্য কারও পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয়।
জেলায় অস্ত্র কারবারিদের দাপট বেড়ে যাওয়ায় পুলিসের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপও নজরদারি বাড়িয়েছে। তারা বিভিন্ন ‘পয়েন্টে’ ওঁত পেতে রয়েছে। তারাই মূলত ইসলামপুরে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি উদ্ধার করেছে। সেভেন এমএম পিস্তলগুলির দাম ছিল ২৫হাজার টাকা। প্রতিটি গুলি ৩০০টাকায় বিক্রি করা হতো। গুলিও মুঙ্গের থেকেই আসছিল। মুঙ্গেরের তৈরি হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলি কালিয়াচকের কারবারিরাই বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছে। সেকারণে মালদহ লাগোয়া এলাকাতেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।