পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বনদপ্তরই ওই স্ত্রী ভল্লুকের নাম রেখেছে ‘রানি’। তার পুরুষ সঙ্গীর নাম ছিল ‘রাজা’। এই রমনাবাগানের মিনি জু’তে রাজা-রানির সাজানো সাম্রাজ্য ছিল। কিন্তু, আড়াই বছর আগে পুরুষসঙ্গীর মৃত্যুতে সম্পূর্ণ একা হয়ে যায় রানি। রাজার মৃত্যুশোকে সে ঘর থেকে খুব একটা বের হতো না। তার জন্য যে গুহা বানানো হয়েছে মাঝে মাঝে সেই গুহায় দীর্ঘক্ষণ ঢুকে বসে থাকত। তবে, এখন মানসিকভাবে অনেক শক্ত হয়েছে সে। সাত সকালে সবুজ ঘাসে মোড়া নিজের জায়গায় আপনমনে পায়চারি করে। দুপুরে নিজেই স্নান সেরে নেয়। তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সে আবার বেরিয়ে পড়ে পায়চারিতে। রমনাবাগানে রানিকে দেখার জন্য প্রতিদিনই ভিড় উপচে পড়ে। কারণ, রানি দর্শক দেখলেই পরিখার সামনে এসে মাথা নাড়ায়।
তবে,পরিখার দিকে গেলেই রানির পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে যায়। কারণ, পরিখার অন্য পারেই রয়েছে রানির প্রতিবেশী ‘ধ্রুব’ ও ‘কালী’। গত জুন মাসেই তারা এই রমনাবাগানে এসে সংসার পেতেছে। ধ্রুব হল পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘ আর কালী হল পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী চিতাবাঘ। এবার তাদের দু’জনের প্রথম ভ্যালেন্টাইন্স ডে। কিন্তু, অপরপারেই একেবারে নিঃসঙ্গ রানি। তাই একাকিত্ব দশা কাটানোর জন্যই বনদপ্তর হন্যে হয়ে পুরুষসঙ্গী খুঁজছে। নিঃসঙ্গ দশা কাটানোর উদ্যোগের সঙ্গে রানির খাওয়া-দাওয়া এবং আতিথেয়তায় যাতে কোনও ত্রুটি না হয় তার জন্য সব সময় নজরদারি করছে বনদপ্তর। প্রাতঃরাশে রানি রোজ রুটি ও মধু খায়। দুপুরে অল্প ভাত। সারাদিনে এক কিলো আটার রুটি খায় সে। তার মধ্যে প্রাতঃরাশে অর্ধেক এবং রাতের খাবারে অর্ধেক। গরমের সময় তাকে নিয়ম করে গ্লুকোজ মেশানো জল, তরমুজ ও ফ্রুট জুস খাওয়ানো হয়। এছাড়াও নিয়মিত অন্যান্য ফলও খাওয়ানো হয়। রানি গরম সহ্য করতে পারে না। গরমের সময় ২৪ ঘণ্টা হাইস্পিডের পাখা চালানো হয়।
বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, স্ত্রী ও পুরুষ একসঙ্গে থাকলে দু’জনেই ভালো থাকে। আমাদের জু’র রানি প্রায় আড়াই বছর ধরে একা রয়েছে। তাই আমরা ওর পুরুষসঙ্গীর খোঁজ করছি। সব জায়গায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জু’ থেকে একটি পুরুষ ভল্লুককে নিয়ে আসার ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রাজ্য থেকে না মিললেও ভিন রাজ্য থেকেও পুরুষ ভল্লুক আনার চেষ্টা করব। তাই অন্যান্য রাজ্যের বিভিন্ন জু’র সঙ্গেও যোগাযোগও করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই, রানির একাকিত্ব কাটানো।