সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢুকলেই প্রথম চোখে পড়বে তিনটি গাছ। যাদের কাল্পনিক হাত বের করা হয়েছে। একটি গাছে কবচ বাঁধা, একটি গাছে ঢিল বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি গাছের তলায় মোমবাতি জ্বলছে। সর্বধর্মের সমন্বয়ের স্পষ্ট বার্তা দেবে গাছ। পড়ুয়াদের মণ্ডপের পরতে পরতে ফুটিয়ে তুলেছে মানব ধর্ম। যেখানে সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে। বিভিন্ন প্রদেশের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের সাঙ্কেতিক চিহ্নগুলির সহাবস্থান দেখা যাবে মণ্ডপে। আবার কৃষ্ণনগরের কলেজিয়েটে স্কুলের থিম ‘সময়’। গুহা মানবের যুগ থেকে স্মার্টফোনের যুগ দুই সময়ের স্পষ্ট পার্থক্য চোখে পড়বে এই স্কুলে ঢুকলেই। পাশাপাশি পরিবেশ বাঁচাতে নানা উদ্যোগ দেখা যাবে স্কুলের মণ্ডপে। কৃষ্ণনগরের এভি স্কুল ঢুকলে দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়ার দাবানলের পরবর্তী পরিস্থিতি। পুড়ে যাওয়া গাছ, বিধ্যস্ত বন্যপ্রাণ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপে। কৃষ্ণনগরের জওহরলাল নেহরু জাতীয় যুব কম্পিউটার সেন্টারে স্মরণ করা হয়েছে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মোনালিসাকে। প্রতিমা তৈরি হয়েছে মোনালিসার আদলে। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির ৫০১ তম মৃত্যুর বছরে শিল্পী, শল্য চিকিৎসক, সামরিক ইঞ্জিনিয়ার সহ তাঁর নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। কৃষ্ণনগরের ক্লাব অভিযানের পুজো এবার ৫৪ তম বর্ষে পা দিল। এবারের থিম ‘মুক্তি’। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সমাজে নারীর অবস্থান, সুরক্ষার বিষয়টি মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে। মূলত নারী স্বাধীনতা, তাঁদের লড়াই, শান্তির মাধ্যমে তাঁদের মুক্তির বাণীকে উৎসর্গ করেছে এই ক্লাব। প্রায় আট হাজার কাগজের পাখি ঝোলানো হয়েছে মণ্ডপে। ক্লাব শহরের এবারের থিম, ‘সেভ সার্কাস’। এক সময় যে সার্কাস দেখার জন্য লোক মুখিয়ে থাকত। তা আজ বিলুপ্ত প্রায়। পুজোর মধ্যে দিয়ে ক্লাব শহর বিপন্ন সেই সার্কাসের অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করেছে। সার্কাসে দেখা যেত যে সব খেলা, তার অনেক কিছুই চাক্ষুস করতে পারবেন দর্শকরা। আবার স্টেশনপাড়া এ বছর প্রথম পুজো করছে। ছোট থেকে বড় সকলে এখন নতুন পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে রয়েছেন।
প্রাচীন মায়াপুরের যুবদলের এবারের সরস্বতী পুজোর থিম মিশর। সব মিলিয়ে বাজেট প্রায় তিন লক্ষ টাকা। প্রাচীন মায়াপুর সীতানাথ লেনে দি নিউ বয়েজ ক্লাবের এবারের থিম কেদারনাথ। প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতার মণ্ডপের সঙ্গে পাটুলি থেকে আনা হয়েছে একদম নতুন ভাবনার প্রতিমা। বুড়োশিবতলা ফ্রেন্ডস ক্লাবের এবারের থিম স্নেহ। বৃদ্ধাবাসের প্রতিবাদী ছবি দেখা যাবে তাদের থিমে। যেখানে ধাপে ধাপে মা তার সন্তানকে স্নেহের সঙ্গে পালন করছেন। সাবেকি ধাঁচের বিরাট প্রতিমার জন্য বিখ্যাত যোগনাথতলা বারোয়ারি। নবদ্বীপের আরসিবি সারস্বত মন্দির স্কুলের থিম মাতৃমঙ্গল। এবারের পুজোয় দেবী সরস্বতীর সঙ্গে স্থান পেয়েছে শচীমাতা, বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী। জগতের মঙ্গল কামনায় মাতৃশক্তির আরাধনা। নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলের এবারের থিম চারু ও কারুকলা। বাংলার হারিয়ে যাওয়া শিল্পকে তুলে ধরতে এই পরিকল্পনা। নবদ্বীপ বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারের থিম পরিবেশ দূষণ সচেতনতা বিষয়ক। থাকছে দাবানল, পারমানবিক দূষণ, তিমির পেট থেকে প্লাস্টিক নির্গমনের দৃশ্য। দূষণের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতেই এবারের এই থিম পরিকল্পনা। এছাড়াও থাকছে পুষ্প প্রদর্শনী, পাখিদের উপর চিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কৃষ্ণনগরে পুজোর পাশাপাশি বিসর্জনের যাত্রাও হয় দেখার মতো।