সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
চীনের য়ুহান প্রদেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে অত্যন্ত তীব্র ভাবে। চীন সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী ভাইরাসের মারণ থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় শতাধিক মানুষ। তার সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সমগ্র চীনে এই ভাইরাসের আতঙ্ক দাবানলের মতো ছড়িয়েছে। সেখানকার মানুষজন কার্যত নিজেদের গৃহবন্দি করে ফেলেছেন। অত্যন্ত প্রয়োজন না থাকলে ঘরের বাইরে কেউই বেরচ্ছেন না। অগত্যা বাইরে বেরলেও মুখে মাস্ক ও সবরকম সুরক্ষা নিয়েই বের হচ্ছেন। ভারতের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বোলপুরের ভুবনডাঙার তিনটি পরিবারের ছয় সদস্য দীর্ঘদিন ধরেই কর্মসূত্রে চীনে বসবাস করছেন। বোলপুরে তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বোলপুরের জীবানন্দ মুখোপাধ্যায় ও আরতি মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অরুণানন্দ মুখোপাধ্যায় চীনের চানসু প্রদেশে স্ত্রী রূপা ও ছেলে তথাগতকে নিয়ে বসবাস করেন। অরুণানন্দবাবু চীনের ওয়ার্ল্ড কলেজের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। তবে, সেমিনার থাকার জন্য তিনি এই মুহূর্তে চীন দেশে নেই। তিনি এখন ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় রয়েছেন। যদিও তাঁর স্ত্রী ও ছেলে চীনে কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। আর ভাইরাসের প্রকোপের খবর জানতে পেরে অত্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অরুণানন্দবাবুর মা ও বাবা। মঙ্গলবার বোলপুরের বাড়িতে অশীতিপর বৃদ্ধ, বৃদ্ধা তাঁর ছেলে, বউমা ও নাতির দেশে সুস্থ সবলভাবে ফিরে আসার প্রার্থনা করছেন।
অরুণানন্দ মুখোপাধ্যায়ের মা আরতি মুখোপাধ্যায় এদিন বলেন, ঘটনার কথা জানার পর থেকে অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। ছেলে, বউমা দীর্ঘদিন বাড়ি আসেনি। এখন যা যোগাযোগ হচ্ছে তা শুধুমাত্র ফোনের মাধ্যমেই। আমরা চাই, ভারত সরকার উদ্যোগ নিয়ে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনুক।
অন্যদিকে ভূবনডাঙারই রণরঞ্জন পাল ও অনিতা পালের ছেলে শুভম পাল বউমা ঋতুপর্ণা পাল চীনের বেইজিং শহরের গত পাঁচবছর ধরে রয়েছেন। শুভম পাল চীনে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’ বছর আগে শেষবার শুভম ও তাঁর স্ত্রী বোলপুরে বাবা-মার কাছে এসেছিলেন। কিছুদিন পরে তাঁদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে চীন থেকে তাঁরা বেরতে পারছেন না। যদিও শুভম পাল একটি ভিডিও বার্তার মধ্য দিয়ে বোলপুরে তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মাকে আশ্বস্ত করেছেন। তাঁরা সুরক্ষিত রয়েছেন সেই বার্তা পেলেও দুশ্চিন্তা কাটছে না পাল পরিবারের। রণরঞ্জনবাবু বলেন, ছেলে-বউমার সঙ্গে ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন যোগাযোগ হচ্ছে। তারা ভালো রয়েছে জানিয়েছে। তবু দুশ্চিন্তা কমছে না।
পাশাপাশি ভুবনডাঙার দশরথ কোনাইয়ের ছেলে কাঞ্চন কোনাই ও মেয়ে সঙ্গীতা কোনাই বিশ্বভারতীতে পড়াশোনার পর চাকরি সূত্রে চীনে রয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরাও একইভাবে প্রায় গৃহবন্দি থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রত্যেক পরিবারই দিন গুনছে কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে ও তাদের প্রিয়জন ফিরে আসবে।