সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকাশ গ্রেটার নয়ডায় ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ছিলেন। গত তিনবছর ধরে তিনি কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। তাঁর দু’টি কিডনিই নষ্ট হওয়ায় বছরখানেক আগে ছোট ছেলেকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দান করেন বাবা। দু’দিন ধরে অসুস্থ বোধ করায় সোমবার রাতে কিষাণগঞ্জ থেকে ডাউন দার্জিলিং মেলের সংরক্ষিত কামরায় চেপে চেকআপের জন্য তাঁকে আরএন টেগোর হাসপাতালে নিয়ে আসছিলেন পরিবারের সদস্যরা। মালদহ স্টেশন ছাড়ার পর প্রকাশ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই সময় কোচ অ্যাটেনডেন্ট ও টিকিট পরীক্ষককে জানিয়েও চিকিৎসক পাওয়া যায়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। প্রকাশের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা পেশায় অ্যাডভোকেট রাজেশকুমার বসাক। তিনি বলেন, টিকিট পরীক্ষক জানিয়ে দেয় পরবর্তী স্টপেজ বোলপুর স্টেশনে রেল চিকিৎসককে ডেকে চিকিৎসা করিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু, মালদহ থেকে বোলপুর স্টেশন আসতে তিনঘণ্টা সময় লাগবে। নিরুপায় হয়ে ভাইয়ের মাথায় জল ঢেলে কিছুটা সুস্থ করার চেষ্টা করি। কিন্তু মাঝপথে ভাই নিস্তেজ হয়ে যায়। অবশেষে রামপুরহাট স্টেশনে স্টপেজ না থাকা সত্ত্বেও রাত ২টো নাগাদ ট্রেনটিকে দাঁড় করানো হয়। রেলের চিকিৎসক এসে দেখে ওই যুবককে মৃত বলে জানিয়ে দেন। সেই সঙ্গে মৃতদেহ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। মঙ্গলবার সেখানেই ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়।
রাজেশকুমার বলেন, চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছোট ছিল প্রকাশ। সে ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ত। গ্রেটার নয়ডায় পড়াকালীন তার কিডনির অসুখ ধরা পড়ে। কলকাতায় আরএন টেগোর হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা শুরু করি। দু’টি কিডনিই বিকল হওয়ায় বাবা নিজের একটি কিডনি দেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। ট্রেনে চিকিৎসক থাকলে হয়তো ভাইকে বাঁচানো সম্ভব হতো। তিনি বলেন, অনেক কাকুতি মিনতি করেও চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায়নি। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত, গুরুত্বপূর্ণ দূরপাল্লার ট্রেনে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা। তাহলে আমার ভাইয়ের মতো অন্য কাউকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে হবে না।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি কামাখ্যা পুরী এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওড়িশার গৃহবধূ সুপ্রিয়া বিসওয়াল। সেক্ষেত্রেও ট্রেনে কোনও চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। গত ৮ জানুয়ারি হামসফর এক্সপ্রেসে চিকিৎসক না থাকায় অন্য এক যাত্রীর পরিচিত চিকিৎসকের ভিডিও কলের সাহায্যে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তামিলনাড়ুর গৃহবধূ এস বিরাক্সাকম্মল।
এব্যাপারে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, দূরপাল্লার ট্রেনে কোনও চিকিৎসক থাকেন না। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে চিকিৎসক রয়েছেন। চলন্ত ট্রেনে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কাছাকাছি স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে সেই যাত্রীর চিকিৎসা করেন তাঁরা। তিনি বলেন, সব ট্রেনে চিকিৎসক রাখতে গেলে বহু ডাক্তারের প্রয়োজন। এমনিতেই চিকিৎসকের অভাব রয়েছে।