সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
এদিন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, সরকার এমনিতেই ১৫ হাজার করে টাকা প্রতিবছর গোষ্ঠীগুলিকে দেয়। তারপরও আবার ৫০০০ টাকা করে সরকারের তরফে দেওয়া হচ্ছে। তাই এই টাকা ভাগাভাগি করে নিলে হবে না। সঠিক পদ্ধতিতে কাজে লাগাতে হবে। তার ফলে আপনারাই স্বনির্ভর হতে পারবেন। এরজন্য প্রশাসন আপনাদের পাশে থাকবে।
জেলাশাসক এদিন আরও বলেন, প্রয়োজনে পোল্ট্রি ফার্ম খোলা যেতে পারে। সেইজন্য প্রশাসনের তরফে দরকার হলে শেড বানিয়ে দেওয়া হবে। অনেক সময় জমি নিয়ে সমস্যা হয়। সেই জমি আপনাদের প্রাপ্ত টাকায় কিনে নিতে পারলে আমরা সাহায্য করব। এরজন্য প্রয়োজনীয় হ্যাচারি করার মেশিনও দেওয়া হবে। এছাড়া যে কোনও ছোট বা বড় পুকুরে মাছ চাষেরও পরামর্শ দিয়েছেন জেলাশাসক। এতে ভালো আয় হতে পারে। ইমিটেশন বা জুয়েলারির বাজারে ভালো চাহিদা রয়েছে। কলকাতা সহ রাজ্যের বাইরেও এর বাজার রয়েছে। তাই এই আর্থিক অনুদান পেয়ে আপনারা সেইসব খাতে ব্যয় করতে পারবেন।
জেলাশাসক বলেন, প্রশাসন ভবনে আপনাদের তৈরি সামগ্রী দিয়ে একটি আউটলেট খোলা হবে। সেই আউটলেট এখানে থাকলে আয় বাড়তে পারে। প্রতিদিন প্রশাসন ভবনে বহু মানুষের আনাগোনা হয়। সেই ব্যাপারে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ডিআরডিসি হলে জেলাশাসক ছাড়াও ছিলন অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) শুভাশিস বেজ, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি নন্দেশ্বর মণ্ডল প্রমুখ। তাছাড়া জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে বহু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য এদিন এই আলোচনাসভায় ছিলেন।
জেলায় বর্তমানে প্রায় ৪৮ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৯৭৩টি গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য তৈরি করা হয়েছে। চলতি মরশুমে জেলায় ৪৪ হাজার ৫৭৭টি গোষ্ঠীকে ৫০০০ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। জেলায় আপাতত ৫০০০ টাকা করে গোষ্ঠীগুলিকে প্রায় ২৩ কোটি টাকা দিয়েছে প্রশাসন। কয়েকদিনের মধ্যে বাকিদেরও টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।
প্রশাসনের দাবি, এই ৫০০০ টাকা করে পাওয়ার জন্য কোনও আবেদন করতে হবে না। যোগ্য নথিভুক্ত হওয়া গোষ্ঠীগুলিকে প্রশাসনের তরফেই তাদের দেওয়া হবে। বরং টাকা না পেলে গোষ্ঠীগুলি ৭৭৭৩০০৩ এই নম্বরে মিসড কল দিতে পারে। অথবা ওই নম্বরে JAAGO লিখে এসএমএসও দিতে পারে। তাহলে প্রশাসনের তরফে সেক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে জেলা প্রশাসন চাইছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বার্ষিক এককালীন এই অনুদান পেয়ে তারা যেন উপযুক্ত কাজে ব্যয় করে। অভিযোগ, জেলায় ৪৮ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী থাকলেও প্রত্যেকেই সঠিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে প্রশাসনের দাবি, জেলায় বহু গোষ্ঠীই নানা ধরনের কাজ করছে। ইতিমধ্যে সেইসব গোষ্ঠীগুলি আয়ও বাড়িয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বিভিন্ন ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। কোথাও গোষ্ঠীগুলি জৈব পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেছে। কোথাও আবার তারা বড়ি, মাশরুম, আচার, জ্যাম, জেলি প্রভৃতি তৈরি করে বাজারজাত করছে। তাছাড়া হস্তশিল্প সহ কাঁথাস্টিচ, বুটিক প্রভৃতি ধরনের কাজও করছে। তাই সেইসব গোষ্ঠীগুলি এককালীন ৫০০০ টাকা করে পেয়ে নিজেদের স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে এই অনুদান দিয়েছেন। জেলায় এই প্রথম স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ২৪ কোটি টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি বিভাগের আধিকারিক সন্তু তরফদার বলেন, জেলায় গোষ্ঠীর মহিলাদের বিভিন্ন ধরনের কাজ শিখতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারপর তাঁদের বিপণনের জন্যও একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মেলায় স্টল করেও তাঁরা আয় বাড়াচ্ছেন।