পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এনআরসি আতঙ্কে নাম ও ঠিকানায় ভুল থাকা প্রচুর উপভোক্তা স্নান-খাওয়া ভুলে গত ৯ থেকে ২৭সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ব্লকে চলা স্পেশাল ক্যাম্পে ভিড় জমান। ভিড় নিয়ন্ত্রণে অনেক জায়গায় পুলিসের সঙ্গে আবেদনকারীদের ঝামেলাও বেধেছে। ভিড় সামলাতে পুলিসকে কার্যত হিমশিম খেতে হয়েছে। কার্ড সংশোধন, নতুন কার্ড এবং কার্ডের স্ট্যাটাস বদল সমেত বিভিন্নরকম ক্যাটাগরিতে মোট ৪ লক্ষ ৪২ হাজার ফর্ম জমা পড়েছিল। সেই সব দরখাস্ত নিষ্পত্তি করে নতুন কার্ড ইস্যু করছে খাদ্যদপ্তর। এখন জেলায় জেলায় সেইসব কার্ড বিতরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।
নাগরিকত্ব প্রমাণে যাতে কোনও রকম সমস্যায় না পড়তে হয়, সেজন্য ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের পাশাপাশি রেশন কার্ডও ত্রুটিমুক্ত রাখতে চাইছেন অনেকেই। আধার কার্ড সংশোধন করার জন্য পোস্ট অফিসে ভোর থেকে লম্বা লাইন পড়ছে। একইভাবে গত সেপ্টেম্বর মাসে রেশন কার্ড সংশোধনের জন্য ফর্ম সংগ্রহ ক্যাম্প শুরু হতেই হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমতে শুরু করে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২৫টি ব্লকে ডিজিটাল রেশন কার্ড সংশোধনের(ফর্ম-৫) জন্য মোট ২ লক্ষ ৭২ হাজার ১৫৯টি ফর্ম জমা পড়ে। পরিবারের কার্ড থাকলেও একজন কিংবা একাধিক জন বাদ পড়েছেন, এরকম আবেদনপত্রের(ফর্ম-৪) সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৮৯৯৭টি। নতুন কার্ডের জন্য আবেদন(ফর্ম-৩)জমা পড়ে ৬৯৮৮টি। জেলায় নতুন কার্ড পেয়েছেন মোট ৭৫ হাজার ২৬জন। আরকেএসওয়াই-২ থেকে আরকেএসওয়াই-১ কার্ডের জন্য আবেদন পড়েছিল ৩২ হাজার ৪৯৯টি। এরকম কার্ড পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৪১জন। হারিয়ে যাওয়ার পর ডুপ্লিকেট রেশন কার্ড এসেছে ৫৪৯৯জনের। আর ভর্তুকিহীন রেশন কার্ডের জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কার্ড এসেছে ১২৪২জনের।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট রেশন দোকানের সংখ্যা ৮৭০টি। মোট উপভোক্তার সংখ্যা ৫৪ লক্ষ। এরমধ্যে ৪৮ লক্ষ উপভোক্তা কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্ট, সংক্ষেপে এনএফএসএ-র আওতায় দু’টাকা কেজি দরে চাল পান। বাকি ছ’লক্ষ উপভোক্তা রাজ্য সরকারের খাদ্য সুরক্ষা যোজনার অন্তর্ভুক্ত। ডিজিটাল রেশন কার্ডে নাম ও ঠিকানায় অনেক ত্রুটি ছিল। রেশনসামগ্রী পাওয়ার ক্ষেত্রে নাম ও ঠিকানায় ত্রুটি থাকাটা কোনও সমস্যা করেনি। কিন্তু, সম্প্রতি এনআরসি এবং নাগরিক সংশোধনী আইন নিয়ে মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয়, সেজন্য অনেকেই স্নান-খাওয়া ভুলে ফর্ম তোলা ও জমা নেওয়ার ক্যাম্পের লাইনে দাঁড়ান। কার্ড সংশোধনের জন্য ৫ নম্বর ফর্ম দেওয়া হয়েছিল। ওই ফর্মের চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। কার্ড সংশোধনের জন্য রেকর্ড সংখ্যক ফর্ম জমা পড়ে। বিপুল সংখ্যক রেশন কার্ড সংশোধনও হয়েছে। নতুন কার্ড আসতে শুরু করেছে। শীঘ্রই উপভোক্তারা নতুন কার্ড পেয়ে যাবেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা খাদ্য নিয়ামক সৈকত চক্রবর্তী বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে ব্লকস্তরে ক্যাম্প চলাকালীন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৪ লক্ষ ৪২ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। এক একটি আবেদনপত্রে চার-পাঁচজনের নামও ছিল। সেইমতো সংশোধনের জন্য যে পরিমাণ আবেদনপত্র জমা পড়েছিল, তার তুলনায় অনেক বেশি কার্ড ইস্যু হয়েছে। নতুন কার্ডের সংখ্যাও ভালো। ডাকযোগে নতুন উপভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি কার্ড পাঠানো শুরু হয়েছে। সংশোধন সহ আরও অন্যান্য ক্যাটাগরির কার্ডও দ্রুত সরবরাহ করা হবে।