বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় গাঢ় জঙ্গলে মাটির ঢিবির উপর ব্র্যাঘ্রচণ্ডী মায়ের পুজো হতো। কথিত আছে, সাধক বামাখ্যাপা তারাপীঠ থেকে মুলটি গ্রামে তারা মায়ের দিদি মা মৌলিক্ষা কালীমন্দিরে যাওয়ার আগে বনহাটে অবস্থিত ব্যাঘ্রচণ্ডী মায়ের পুজো করে তবেই সেখানে যেতেন। ঠিক কত বছর থেকে এখানে মায়ের নিত্যপুজো হয়ে আসছে তা কেউই বলতে পারেননি। তবে অনেকের দাবি, প্রায় পাঁচশো বছর আগে থেকে এই পুজো হয়ে আসছে। বর্তমানে এলাকাবাসীর দানে সেখানে মায়ের পাকা মন্দির, ভোগ ঘর ও একটি গেস্ট হাউসও নির্মাণ করা হয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত বনহাট গ্রামে খুব অল্প সংখ্যক হিন্দু ও আদিবাসী পরিবারের বসবাস রয়েছে। মন্দির ও গেস্ট হাউস নির্মাণে ৮০ শতাংশ অবদান মুসলিমদেরই রয়েছে বলে দাবি মন্দির কমিটির। প্রতি বছরই ঘটা করে এখানে অম্বুবাচি উৎসব পালিত হয়। এছাড়া জানুয়ারি মাসের শেষ সোমবার মায়ের বিশেষ পুজো হয়ে আসছে। যত দিন যাচ্ছে ততই পুজোর আড়ম্বর বেড়ে চলেছে। এদিন সকাল দুপুর থেকে মায়ের বিশেষ পুজো শুরু হয়। সেখানে অগণিত মানুষের পাশাপাশি শামিল হয়েছিলেন এলাকার সংসদ সদস্য শতাব্দী রায়। তিনি পুজো নিবেদন করার পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ বসে যজ্ঞ দেখেন। এদিন মাকে পাঁচ রকম ফল, কাজু, কিসমিস দিয়ে তৈরি পায়েস, খিচুড়ি, পাঁচ তরকারি ও চাটনি দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে সেই ভোগ রান্না করেন। এদিন উপস্থিত হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই বলেন, এখানে জাত ধর্ম বলে কিছু নেই। আমরা শুধু রান্না নয়, সকলের সঙ্গে বসে ভোগও খাই।
মন্দির কমিটির সম্পাদক প্রকাশ মণ্ডল বলেন, এটা আমাদের কাছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পীঠস্থান। এখানে আদিবাসী, হিন্দু, মুসলিম সব সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোয় সহযোগিতা করেন।
বনহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জহিরুল শেখ বলেন, বহুদিন থেকেই এখানে পুজো দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন আমাদের সংসদ সদস্য। সেই মতো তিনি এদিন এসে নিষ্ঠা ভরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি যজ্ঞ দেখেছেন। প্রচুর মানুষের ভিড় জমেছিল। সকলকে পাত পেড়ে অন্ন ভোগ খাওয়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে যখন ধর্মীয় আঘাত হানার চেষ্টা চলছে, তখন মা ব্যাঘ্রচণ্ডী সম্প্রীতির বার্তা বহন করছেন। অম্বুবাচি উৎসবের সময় এই ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।