বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এদিন মন্ত্রী বলেন, এর আগে স্থানীয় পুলিস প্রশাসনের সঙ্গে আপনাদের সঙ্গে আইনগত এবং অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। ইতিমধ্যে আমি জেলা পুলিস কর্তৃপক্ষ এবং নন্দীগ্রাম থানার পুলিসকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত কাউকে কোনওভাবে হয়রানি করা যাবে না। তাঁরা যাতে সুস্থভাবে কাজ করতে পারেন সেটা আমাদের দেখতে হবে। বেকারত্বের যুগে আপনারা বিকল্প রোজগারের রাস্তা খুলে দিয়েছেন। প্রথম এই পেশার মাধ্যমে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আসছে। দ্বিতীয়ত, নিজেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেকটি ফার্মে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রচুর ছেলে কাজ পাচ্ছেন। এর বাইরে প্রসেসিং, প্যাকেজিং এবং পরিবহণ মিলিয়ে অনুসারি শিল্পে দশ গুণ লোক কাজ পাচ্ছেন। আজকে বেকারত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনারা যেভাবে এগিয়ে এসে আমার বেকার যুবক ভাইদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং স্বনির্ভর করছেন। তাতে অনেক বেশি উপকার হচ্ছে। এই এলাকা এক ফসলি। ভূগর্ভস্থ জলও এখানে নোনা। তাঁরা ধান চাষ কিংবা ফসল ফলিয়ে যে টাকা আয় করতেন, চিংড়ি চাষের জন্য জমি লিজে দিয়ে তার পাঁচ গুণ বেশি টাকা পাচ্ছেন।
এদিন ভেনামি অ্যান্ড বাগদা অ্যাকোয়া কালচার সমিতির সম্মেলনে মন্ত্রী ছাড়াও জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী, নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহের খান, অতিরিক্ত মৎস্য অধিকর্তা অসীমকুমার মহান্তি, সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মদনমোহন মণ্ডল, সংগঠনের স্থানীয় সভাপতি হাজি শেখ আলমগীর হোসেন ও সম্পাদক শেখ কাসেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিন সংগঠনের পক্ষ থেকে হিমঘর সহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই সব প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। তার আগে সংগঠনের কর্মকর্তাদের একটি সোসাইটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই কাজে তিনি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাতে ঋণ দেওয়া সহ আরও বেশি করে সহযোগিতা করতে সুবিধা হবে। এছাড়াও ফার্ম এলাকায় রাস্তাঘাট, পানীয় জল সহ যেকোনও পরিকাঠামোগত সমস্যা থাকলে তাঁর নজরে আনার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
এদিন মন্ত্রী বলেন, চিংড়ি রপ্তানি করে ২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৭০০কোটি বৈদেশিক মুদ্রা এসেছে। এছাড়াও কাজুবাদাম রপ্তানি করে ৩০০কোটি বৈদেশিক মুদ্রা এসেছে। একটা সময় জাপান এখানকার ভেনামি চিংড়ি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিল। তাতে বহু চাষি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। এমনকী দুই থেকে তিনটি আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছিল। তাঁরা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে পারেননি। জমিজমা যা কিছু ছিল সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আমরা সবাই মিলে দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরকে সঙ্গে নিয়ে জাপান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলে এই সমস্যা মিটিয়ে দিয়েছিলাম। এখন আর রপ্তানি করার ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর কোনও সমস্যা হয়নি। সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় আমার জন্ম এবং কর্ম। এখানেই আমার পরিচিতি। আমি জানি, এই চাষ ও ব্যবসা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সবকিছু করতে হয়। ধান জমিতে মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ছিল। সেই নিয়েও আমাদের সরকার ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে। কাঁথি-৩ ব্লকের নাচিন্দায় একটি মিটিং হয়েছিল। সেখানে আমি, শিশিরবাবু এবং মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা ছিলেন। সেখানে আমরা উদ্যোগ নিয়ে ভূমি সংস্কার দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে কৃষি জমিতে বিকল্প পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাহলে কৃষি জমিতে এত ব্যাপকভাবে চিংড়ি চাষ সম্ভব হতো না। এদিকে এদিন মঞ্চে শুভেন্দুবাবুর পাশে থাকার আশ্বাস পেয়ে এলাকার চিংড়ি চাষের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী ও চাষিরা খুবই খুশি।