কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
পুলিস ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেও বাঁকুড়া জেলায় মাওবাদীদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। এমনকী, স্থায়ী কোনও ক্যাম্প না থাকলেও এখনও মাঝে মধ্যে জঙ্গলমহলে তাদের আনাগোনা রয়েছে। তাই সাধারণতন্ত্র দিবসে বা তার আগে যাতে জেলায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য জেলা পুলিস বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। সারেঙ্গা, রানিবাঁধ, বারিকুল, তালডাংরা ও সিমলাপাল থানা এলাকায় শুক্রবার থেকেই পুলিস ও জঙ্গলমহলে থাকা এক কোম্পানি সিআরপিএফ বাহিনী কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে গিয়ে অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়াও জঙ্গলমহলের প্রতিটি থানা থেকেই আলাদা করে টহল ও তাঁদের এলাকায় থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার উপর আলাদা নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সতর্কতা হিসেবে জেলার মোট ২৩টি পয়েন্টে পুলিসের তরফে ২৪ ঘণ্টা নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকা, হাসপাতাল, প্রশাসনিক ভবনগুলির সামনেও সাদা পোশাকে পুলিসি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিসের মতোই রেলের তরফেও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ও জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাওয়া রেল পথে বিশেষ নজরদারি চালানো হয়। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে যাত্রী ও তাঁদের জিনিসপত্র চেকিং করে রেল পুলিস।
বাঁকুড়ার পুলিস সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে নাশকতা এড়াতে জেলা পুলিস নাকা চেকিং, বাড়তি টহল ও মাওবাদী অধ্যুষিত থানাগুলিতে আলাদা করে এরিয়া ডমিনেশনের কাজ চলছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।
বাঁকুড়ার মতোই মাওবাদী অধ্যুষিত পুরুলিয়া জেলায় কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিসের তরফে প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে সাদা পোশাকে পুলিসের নজরদারি ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাওবাদী অধ্যুষিত, বাঘমুণ্ডি, বলরামপুর, আড়ষা সর্বত্রই নজরদারি চালানো হয়েছে। একসময়ের মাওবাদী অধ্যুষিত পুরুলিয়া জেলায় সাধারণতন্ত্র দিবসের দিনে কোথাও যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয় সেই বিষয়ে বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিস। পুরুলিয়া জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী থানাগুলিতেও সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারির পাশাপাশি নাকা চেকিংয়ও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও জেলার একাধিক থানা এলাকায় নাগা জওয়ান ও রাজ্য পুলিসের ক্যাম্পগুলিতেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে জেলা পুলিস। স্টেশন ছাড়াও জনবহুল এলাকাতেও নজরদারি রয়েছে পুলিসের। এদিন সাঁতুড়ির পোড়াডিহা, মারবেদিয়া ও আদ্রা রেল শহরের একাধিক জায়গায় নাকা চেকিং করা হয়। এছাড়া নিতুড়িয়ার ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় পাঞ্চেত ড্যাম্পের কাছে ও সাঁওতালডিহি থানার করগালি ঝাড়খণ্ড বর্ডার এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়। রাস্তা দিয়ে যাওয়া প্রায় প্রতিটি গাড়ির ডিকি খুলে তল্লাশি চালানো হয়। সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে জেলা পুলিসের তরফে কড়া নজরদারির ব্যবস্থায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া জেলা পুলিসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি থানা এলাকায় রাতে নাকা চেকিংয়ের বিশেষ টিম ও গাড়ি থাকবে।
অন্যদিকে,আরামবাগ শহর সহ শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত মোট সাতটি জায়গায় বিশেষ নাকা চেকিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে হুগলি জেলা পুলিস। এরমধ্যে রয়েছে আরামবাগের পল্লিশ্রী মোড়, নেতাজি স্কোয়ার, বাসুদেবপুর মোড়, চাদুর ফরেস্ট সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল এলাকা। ইতিমধ্যে জেলা পুলিসের তরফে সেই নির্দেশিকা পাঠানো হয় আরামবাগ এসডিপিও দপ্তরে। মূলত হুগলি জেলার সীমান্ত লাগোয়া শহর হওয়ার কারণে, পশ্চিম মেদিনীপুর অথবা বাঁকুড়া জেলা থেকে দুষ্কৃতীরা এসে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা বা নাশকতা যাতে করতে না পারে। সেজন্যই পুলিসের তরফে আগাম সর্তকতা জারি করা হয়।
আরামবাগে এসডিপিও নির্মল কুমার দাস বলেন, জেলার নির্দেশ মতো ইতিমধ্যে আমরা ওই সকল চেক পয়েন্টগুলিতে নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি সন্দেহজনক যানবাহনের উপরেও নজরদারি চলছে। এছাড়া সাদা পোশাকের পুলিস শহরের বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় টহল দিচ্ছে। সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আরামবাগ মহকুমাজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া মহিলা পুলিসের একটি বিশেষ দল বাড়তি নজরদারি চালাচ্ছে।