পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
হাসপাতাল ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়না থানার শিপটা উত্তরপাড়ার গৃহবধূ রিমা মালিক গত শুক্রবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। রবিবার সকালে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। রিমাদেবীর স্বামী সন্দীপ মালিক স্ত্রী ও সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে ওয়ার্ডের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সঙ্গে রিমাদেবীর মা’ও ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রিমাদেবীকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাতৃযানের ব্যবস্থা করেছিল। তার জন্যই তাঁদের দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। এর মধ্যে এক মহিলা এসে রিমাদেবী এবং সন্দীপবাবুর সঙ্গে আলাপ করে। এবং ওই মহিলা জানায়, কন্যাসন্তান হলেই সরকারি প্রকল্প থেকে ছ’হাজার টাকা করে পাওয়া যায়। আপনারা কী সেই টাকা পেয়েছেন? তখন সন্দীপবাবু বলেন, না পাইনি। তারপরই ওই মহিলা সুযোগ বুঝে সঙ্গে সঙ্গে ‘টোপ’ ফেলে। সে বলে, অনাময় হাসপাতাল থেকে ওই টাকা পাওয়া যায়। সন্তানকে নিয়ে যেতে হবে। হাতে হাতেই টাকা দিয়ে দেবে।
এ কথা শোনার পর সন্দীপবাবু এবং রিমাদেবী ঠিক করেন, বাড়ি যাওয়ার আগে সরকারি টাকাটা তাঁরা নিয়েই ফিরবেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অনাময় হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ওই মহিলাই একটি টোটো ভাড়া করে। টোটোয় করে রিমাদেবী, তাঁর সন্তান ও সন্দীপবাবু এবং রিমাদেবীর মাকে নিয়ে সে সোজা অনাময় হাসপাতালে এসে হাজির হয়। তারপর সে সবাইকে নিয়ে হাসপাতালের ভিতরে ঢোকে। ওই মহিলা রিমাদেবীকে একটি জায়গায় বসতে বলে। সেখানে রিমাদেবী তাঁর মায়ের সঙ্গে বসেন। তাঁদের কোলেই সদ্যোজাত কন্যাসন্তান তখন ঘুমোচ্ছিল। ওই মহিলা সন্দীপবাবুকে বলে, আপনি আমার সঙ্গে অফিসে চলুন। কিছু কাগজে সই করতে হবে। সেখান থেকে সন্দীপবাবুকে নিয়ে ভিতরে অন্য দিকে নিয়ে যায়। তারপর এক মিনিটের জন্য সে আড়াল হয়। পরে এসে সন্দীপবাবু বলে, অফিস থেকে মা ও মেয়েকে দেখতে চাইছে। আপনি এখানেই বসুন। আমি ওদের নিয়ে আসছি।
তারপর ওই মহিলা রিমাদেবীর কাছে এসে হাজির হয়। সেখানে গিয়ে বলে, তোমার স্বামী অফিসে রয়েছে। কিন্তু, অফিস থেকে শিশুকে দেখতে চাইছে। সন্দীপবাবুকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে এসেছি। তুমি এখানেই বসে বিশ্রাম নাও। মেয়েকে আমার কোলে দাও। আমি ওর বাবার কাছে দিয়ে আসছি। ওই মহিলার কথা বিশ্বাস করে, রিমাদেবী সদ্যোজাতকে তার কোলে দিয়ে দেয়। শিশুকে কোলে নিয়ে ওই মহিলা সোজা অনাময় হাসপাতাল থেকে বাইরে বেরিয়ে চম্পট দেয়। এদিকে, অনেকক্ষণ হওয়ার পরেও স্বামী না ফেরায় রিমাদেবী সন্দীপবাবুকে ফোন করেন। তখন সন্দীপবাবু আকাশ থেকে পড়েন। তারপরই তাঁরা বুঝতে পারেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এবং তাঁদের সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে ওই মহিলা চুরি করে পালিয়েছে। তারপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ অমিতাভ সাহা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সদ্যোজাতকে নিয়ে পালানোর সময় সিসি টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। আমরা সেই সমস্ত ফুটেজ তদন্তের জন্য পুলিসকে দিয়েছি। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। পুলিস জানিয়েছে, ফুটেজ খতিয়ে দেখে মহিলাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তার খোঁজে তল্লাশিও শুরু হয়েছে।