রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
জিয়াগঞ্জের তাঁতিপাড়া সিল্কের জন্য বিখ্যাত। এই তাঁতি পাড়ায় তৈরি বালুচরি শাড়ির একদা জগৎ জোড়া নাম ছিল। বর্তমান সময়ে জিয়াগঞ্জের তাঁতিপাড়ায় বালুচরি শাড়ি তৈরি না হলেও সিল্কের ঐতিহ্যকে এখনও বেশ কয়েকঘর তাঁতি বহন করে চলেছে। জিয়াগঞ্জ্বের সিল্কের টানেই আজও বছরে বেশ কয়েকবার বিদেশিরা ভিড় জমায় তাঁতিপাড়ায়। জিয়াগঞ্জের তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা সুশান্ত বৈলদ্যার বড় মেয়ে সুদেষ্ণা। তাঁতি পরিবারের মেয়ে হয়েও সিল্কের প্রতি কোনওদিন আকর্ষণ ছিল না। বরং বিভিন্ন পুজোর সময় দোকানে সাজিয়ে রাখা মেয়েদের গয়নার প্রতি আকর্ষণ ছিল। একটু বড় হতেই মেয়েদের গয়না তৈরি করে ব্যবসা শুরু করার ইচ্ছা জাগে। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেই স্থানীয় একটি হস্ত শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতেই গয়না তৈরির কাজ শুরু করেন। গত দেড় বছরে তাঁতি পাড়ার ছাত্রীর তৈরি গয়না জিয়াগঞ্জ, লালবাগ প্রভৃতি এলাকার বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। পুজোর পাশাপাশি বিয়ের উৎসবে গয়না কেনার জন্য মেয়েরা দল বেঁধে বাড়িতে ভিড় জমায়। জনপ্রিয়তা এবং সুনাম বেড়ে যাওয়ায় মূলধন কয়েকগুণ বেড়েছে। মেয়েকে কারবার শুরু করতে মূলধন জোগান দিয়েছিলেন মা কৃষ্ণা বৈলদ্যা। তিনি বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার কয়েকদিন পরেই হাতের কাজ শেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে। জিয়াগঞ্জের একটি সংস্থায় তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেয়। তারপরে আমার দেওয়া হাজার খানেক টাকা দিয়েই কাঁচামাল কিনে এনে গয়না তৈরি শুরু করে।
সুদেষ্ণা বলেন, প্রথম দিকে জিয়াগঞ্জের বাজার থেকে কাঁচামাল কিনে এনে তৈরি করে বিক্রি করছিলাম। কিন্তু কাঁচামালের দাম বেশি হয়ে যাওয়ায় লাভ হচ্ছিল না। বেশ কিছুদিন ধরে বহরমপুর থেকে কাঁচামাল কিনে আনছি। প্রথম দিকে পরিচিতি না থাকায় বিক্রি কম হচ্ছিল। ফেসবুক সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে প্রচারের ফলে এখন লালবাগ, বহরমপুর থেকেও অনেক মেয়েরা আসছেন। বিশেষ করে দুর্গা পুজো, সরস্বতী পুজো এবং বিয়ের মরসুমে ব্যবসা ভালো হয়। হাতের কাজ করে মাসে নিজের পড়াশোনা সহ সব খরচ চালাতে পারছি। তবে শুধু নিজে স্বাবলম্বী হওয়াই নয়, আর্থিকভাবে দুর্বল মেয়েদের কাজ শিখিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলার ইচ্ছা রয়েছে।
বাবা সুশান্ত বৈলদ্যা বলেন, বর্তমান সময়ে তাঁতের কাজ করে সংসার চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। সামান্য রোজগার থেকে সংসার চালিয়ে মেয়েদের পড়াশুনা ও অন্যান্য খরচ চালানো সম্ভব হয় না। তাই মেয়ে যখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য নিজে একটা ব্যবসা শুরু করার কথা জানাল তখন আর নিষেধ করিনি।