বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বর্ধমান শহরের নতুনপল্লি এলাকায় তুষারকান্তিবাবুর বাড়ি। তিনি বরাকর বেগুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। প্রতিদিন ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসেই যাতায়াত করেন। বীরভূমের সাদিনপুরে তাঁর দেশের বাড়ি। গত শুক্রবার তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। বর্ধমানের বাড়িতে ফেরার জন্য তিনি শনিবার বিকেল ৫টা নাগাদ সাদিনপুর স্টেশন থেকে ডাউন জয়নগর-হাওড়া ফাস্ট প্যাসেঞ্জারে চাপেন। ট্রেনটি রামপুরহাট স্টেশন ছাড়ার পর রামপুরহাট ও তারাপীঠ স্টেশনের মাঝখানে আচমকা বাইরে থেকে দুষ্কৃতীরা পাথর ছোঁড়ে। চলন্ত ট্রেনের জানালা হয়ে ওই পাথর তুষারকান্তিবাবুর কপালে সজোরে গিয়ে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে গভীর ক্ষত হয় তাঁর কপাল। প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। আর একটি পাথর উড়ে এসে তাঁর পাশে বসে থাকা আরও এক যাত্রীর গায়ে এসে লাগে। তিনি অল্পবিস্তর জখম হন। তবে, তিনি তুষারকান্তিবাবুর মতো রক্তাক্ত হননি। তবে, এই ঘটনার পরই অন্যান্য যাত্রীর মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। রুমাল দিয়ে ক্ষত জায়গা চেপে তিনি রামপুরহাট অনুসন্ধান কেন্দ্রে ফোন করে বিষয়টি জানান। যারা পাথর ছুঁড়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান তিনি।
রাত ৮টা ১৫ মিনিট নাগাদ তিনি বর্ধমান স্টেশনে নামেন। সহযাত্রীরা তাঁকে ধরে কোনওরকমে ট্রেন থেকে নামান। খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী বর্ধমান স্টেশনে এসেছিলেন। রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় রাতে জিআরপির কাছে না গিয়ে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার পর তাঁকে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। রবিবার সকালে পুরো ঘটনার কথা লিখে তিনি বর্ধমান জিআরপি’র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বর্ধমান জিআরপির মাধ্যমে সাঁইথিয়া জিআরপিকে উদ্দেশ্য করে ওই অভিযোগ জমা দিয়েছেন। রেল পুলিস জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে, এই ঘটনায় আতঙ্কিত ট্রেন যাত্রীদের দাবি, এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। রেললাইনের ধারে টহলও বাড়াতে হবে। তা না হলে এই ধরনের ঘটনা আবার ঘটতে পারে। কোনও শিশুর মাথায় ওই পাথর লাগলে বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত।
জখম শিক্ষক তুষারকান্তি মুখোপাধ্যায় বলেন, আমি ইঞ্জিনের দিক থেকে ৪ নম্বর কামরায় ছিলাম। বাইরে থেকে যখন পাথর ছোঁড়া হয়েছে, তখন একটা শব্দ পেলাম। তারপরই আমার কপালে এসে লাগল। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। সহযাত্রীরা সকলেই সাহায্য করেছেন। এই ঘটনায় আমি খুবই আতঙ্কিত। এমনকী আমার পরিবারও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। কারণ, আমি রোজ ট্রেনে করেই স্কুলে যায়। তিনি বলেন, ট্রেনে পাথর ছোঁড়ার গল্প শুনেছি। কিন্তু, আমার সঙ্গে কোনওদিন এই ঘটনা ঘটেনি। এই প্রথম।