রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
গত ১১ ও ১২ ডিসেম্বর দীঘায় ‘বিজনেস কনক্লেভে’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সৌরশক্তির প্ল্যান্ট তৈরির জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দেয় কেএফডব্লু। সেই প্রকল্পটিই অনুমোদিত করেছে সরকার। দূষণহীন এই সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পকে সমর্থন জানিয়েছেন এলাকার মানুষজন। এখানে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হলে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নতির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
তখন ১৯৩৪সাল। দেশজুড়ে তখন লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন চলছে। সেই আবহেই আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল বেঙ্গল সল্ট কোম্পানি। এখানে প্রচুর নুন উৎপাদন হতো। কিন্তু শ্রমিক অসন্তোষ সহ নানা কারণে ১৯৯২ সাল নাগাদ এই কারখানাটি পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে রাজ্য সরকার কারখানা খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ নিলেও সুফল পাওয়া যায়নি। ধীরে ধীরে ভগ্নদশায় পরিণত হয় কারখানাটি। রামনগরের চাউলখোলা থেকে দীঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কের পূর্বদিকে মন্দারমণি পর্যটন কেন্দ্র যাওয়ার পথে দাদনপাত্রবাড়ে নজরে পড়বে ভগ্নপ্রায় এই কারখানাটি, যা এখনও অতীতের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান বা জীবিকা উপযোগী প্রকল্প গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে তাঁদের দাবি পূরণ হতে চলেছে।
কারখানার ভাঙা কোয়ার্টারে এখনও থাকেন কোম্পানির ডিরেক্টর বোর্ডের সদস্য মদনমোহন দাস। যিনি এখানে একটা সময় সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বলেন, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার খবরে আমরা খুশি। তবে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কর্মচারীদের এখনও ১কোটি টাকারও বেশি বকেয়া রয়েছে। রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়ে সেই টাকা মিটিয়ে দিলে খুবই ভালো হতো। তাঁর কথায়, স্থানীয় যুবকরা অনেকেই কাজের জন্য বাইরে চলে যাচ্ছে। এখানে আর কিছু না হোক, অন্তত একটি দোকান খুলে তো তারা জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
রামনগর-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা স্থানীয় রানিয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রণব পঞ্চাধ্যায়ী বলেন, আমরা চাই, দাদনপাত্রবাড়ে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে উঠুক। রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা এবং উদ্যোগকে আমরা সমর্থন করছি।
রামনগরের সিপিএম নেতা তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশিস প্রামাণিক বলেন, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তো ভালোই হবে। বাম সরকারের আমলেই দাদনপাত্রবাড়ে বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পও গড়ার পরিকল্পনা হয়েছিল। এই সরকার সেই প্রকল্পের বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে মাত্র। তবে অনেক প্রকল্পই তো ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। কিন্তু বেশিরভাগই বাস্তবের মুখ দেখেনি। আগে তো প্রকল্পটি গড়ে উঠুক। কারণ না আঁচালে বিশ্বাস নেই।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস বলেন, দীঘায় বাণিজ্য সম্মেলনে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার জন্য জার্মানির ওই সংস্থার পক্ষ থেকে বিনিয়োগের প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে এসেছিল। রাজ্য সরকার তা লুফে নিয়েছে। অবশেষে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে চলেছে। এতে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এখন কাজ শুরুর অপেক্ষা।