রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি বিশ্বভারতীতে সিএএর সমর্থনে লেকচার দিতে এসে বিজেপির রাজ্যসভার সদস্য স্বপন দাশগুপ্ত ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েন। প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে তিনি সহ উপাচার্য ও অন্যান্যরা সেমিনার হলের মধ্যে ঘেরাও হয়ে থাকেন। অবশেষে গভীর রাতে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ তুলে নিলে তাঁরা ঘেরাওমুক্ত হন। সেই ঘটনার প্রায় একসপ্তাহ পরেই গত বুধবার গভীর রাতে বিশ্বভারতীর বিদ্যাভবন বয়েজ হস্টেলে ঢুকে পড়ুয়াদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এক ছাত্র স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায় বিশ্বভারতীর পিয়ারসন মেমেরারিয়াল হাসপাতালে জখম অবস্থায় ভর্তি হন। সেই ঘটনায় বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রী ঐক্য নামের সংগঠন এবিভিপির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলে। যদিও অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে পরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। শান্তিনিকেতন থানায় এক ছাত্রের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস অচিন্ত্য বাগদি ও সাবির আলি বক্সকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্তরা নিজেদের তৃণমূল বলে দাবি করলেও দল তা অস্বীকার করে।
এই ঘটনা ঘিরে গত বৃহস্পতিবার দিনভর বিশ্বভারতীতে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। মিছিলের পাশাপাশি শান্তিনিকেতন থানাতেও পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখান। অভিযুক্তদের অবশ্য পুলিস গ্রেপ্তার করে ন’দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর এক অভিযুক্ত পলাতক।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন সদস্যের ওই কমিটিতে রয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। এছাড়া বিশ্বভারতীর দু’জন অধ্যাপক তথা এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য দুলালচন্দ্র ঘোষ ও মঞ্জুমোহন মুখোপাধ্যায়কে রাখা হয়েছে। পূর্বপল্লি বয়েজ হস্টেলের ওয়ার্ডেনকে সরিয়ে অন্যজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যিনি ওয়ার্ডেন হিসেবে সময় দিতে পারবেন বলে কর্তৃপক্ষের মনে হয়েছে, তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, বুধবার হস্টেলে মারধরের ঘটনা নিয়ে পড়ুয়াদের একাংশ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি তোলেন। তাঁরা বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। সেব্যাপারে জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, এদিন জখম ছাত্র স্বপ্ননীলকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুনিশ্চিত করতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিশ্বভারতীতে সিআইএসএফ মোতায়েন করা যায়, তার চেষ্টা করছি।
ক্যাম্পাসে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও সেখানে প্রতিবাদে শামিল হন বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ। অন্যদিকে, এদিন মহম্মদবাজারের দলীয় জনসভায় যোগ দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বিশ্বভারতীতে আমরা ঢুকি না। আমরা চাই, সেখানে পড়াশোনা হোক। তবে, যাদবপুর থেকে যদি বামপন্থীদের এনে মস্তানি করব ভাবে, তাহলে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। যাদবপুরের চেয়ে তিনগুণ মস্তান বোলপুরে আছে। অনুব্রতবাবু বলেন, উপাচার্য কেমন তা আমি জানি না। কখনও বলছেন, পৌষমেলা হবে না। কখনও বলছেন, বসন্ত উৎসব হবে না। রাজ্য সরকারকে অপমান করা যাবে না। শিক্ষামন্ত্রী আমাকে বললে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করব।
এদিকে, এদিন বোলপুরের জামবুনিতে এবিভিপির তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করে সংগঠনের বিরুদ্ধে ওঠা মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন এবিভিপির জেলা সংগঠনের সম্পাদক রমেশ প্রামাণিক।