পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এদিন এই মিছিলকে কেন্দ্র করে নেতা ও কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে যেমন মিছিল করে কর্মী-সমর্থকরা বিদ্যাসাগর হল ময়দানে জমা হন, তেমনই ব্লক সভাপতিদের নেতৃত্বে ছোট ছোট গাড়ি করে বিভিন্ন ব্লক থেকেও মিছিল আসে। মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে শহর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী জিন্দাবাদ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ এবং দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মিছিল থেকে ঘন ঘন শ্লোগান ওঠে। নেতাদের বুকে ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, এনআরসি বাংলায় হচ্ছে না, হবেও না। শুভেন্দুবাবুও এদিন হাতে পতাকা ধরেন। শ্লোগানও দেন।
এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ শুভেন্দুবাবু এসে পৌঁছনোর পর মিছিল শুরু হয়। বিদ্যাসাগর হল থেকে বটতলা চক, গোলকুঁয়া চক, পঞ্চুরচক হয়ে গান্ধী মূর্তির সামনে এসে মিছিল শেষ হয়। মিছিলে টাউন মুসলিম কমিটিও যোগ দেয়। সংগঠনের সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, তৃণমূলের জেলা সভাপতির ডাকে আমরা মিছিলে যোগ দিয়েছি। এদিন মিছিল দেখতে রাস্তার দু’ধারে মানুষের ভিড় জমে যায়। মোবাইলে মিছিলের ছবি বিশেষ করে শুভেন্দুবাবুর ছবি ধরে রাখার ব্যস্ততাও ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই হাত নাড়িয়ে মিছিলকে সমর্থন জানান। চলার পথে অনেক সাধারণ মানুষকেও মিছিলে পা মেলাতে দেখা যায়।
শুভেন্দুবাবু বলেন, আমাদের নেত্রী এনআরসি ও সিএএ-র বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিকভাবে শিষ্টাচার মেনে শান্তিপূর্ণ মিছিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন মেদিনীপুরের মিছিলে আমাকে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই আমি এসেছি। প্রতিটি জেলায় এদিন আমাদের মিছিল হচ্ছে। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে যা হচ্ছে তা একেবারে অনুচিত। এর ফলে মূল ইস্যু, আন্দোলনের মূল ধারা নষ্ট হচ্ছে। যারা এসব করছে গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার না মেনেই করছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার ঘোষণা করেছেন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা ট্রেন, বাস পোড়াচ্ছে, তারা সমাজবিরোধী, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বিজেপি বা ভারত সরকার চাইছে আন্দোলন অন্য জায়গায় চলে যাক। আমাদের ওই জায়গায় নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগঠিত করে প্রতিবাদ করা উচিত। মন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে দায়িত্ব নিয়ে বলছেন সেখানে অন্য রাজ্যগুলি শুধু স্টেটমেন্ট করছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সরকারিভাবে বলেছেন, তৃণমূল সরকার যতদিন থাকবে, এরাজ্যে এনআরসি, সিএএ হবে না। তাঁর উপর আমাদের আস্থা, ভরসা রাখা উচিত। অবরোধ, ভাঙচুর করে নয়, গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত করা উচিত।
তিনি বলেন, এখন দোষারোপ করার সময় নয়। আমাদের ১১টি গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমরা ১১টি এফআইআর করেছি। সময়মতো তাদের চিহ্নিত করা হবে। আইন সবার জন্য সমান। কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। আর সরকারি সম্পত্তি কোনও দলের সম্পত্তি নয়। ওই সম্পত্তি আমার আপনার সকলের। এটা সবার আগে বুঝতে হবে। যারা এই সব সম্পত্তি নষ্ট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। শুভেন্দুবাবু বলেন, আমাদের নেত্রী ঘোষণা করেছেন নো এনআরসি, নো সিএএ। পশ্চিমবঙ্গে ওসব হবে না। ভারতবর্ষেও হবে না।
এদিন মিছিলে ব্যাপক ভিড় হয়। মিছিল থেকে এনআরসি বিরোধী শ্লোগান তোলা হয়। এই ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদ করার ডাক দেওয়া হয়। এদিন মূল মিছিল শেষ হয়ে যাওয়ার পর কর্মী-সমর্থকরা মিছিল করেই নিজের নিজের এলাকায় ফিরে যান।