কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
লোকমান শেখ। বছর ষাটেকের এই বৃদ্ধের বাড়ি মুরারই থানার সমুরপুর গ্রামে। জানা গিয়েছে, ১০বছর বয়সে আগুনে তাঁর বাঁ দিকের পাঁজর ও হাত পুড়ে যায়। পরে পোড়া অংশ সেরে উঠলেও বগলের ভিতরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যার ফলে তাঁর বাঁ হাত অকেজো হয়ে পড়ে। ডাক্তার না দেখিয়ে সেভাবেই তিনি থেকে যান। পরে সেই ক্ষত মার্জোলিন আলসারে পরিণত হয়। এরপর ধীরে ধীরে সেই আলসার বড় হয়ে ‘ফ্র্যাঙ্ক স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সারে’ রূপান্তরিত হয়। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু, পিজিতে অপারেশনের জন্য চারমাস পরে দিন দেয়। এতদিন অপেক্ষা করলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে বুঝে ফের তাঁকে রামপুরহাট হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সার্জেন ডাঃ সিদ্ধার্থ বিশ্বাস রোগীর পরিবারের আবেদনে সাড়া দিয়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার সন্ধ্যা থেকে টানা ছ’ঘণ্টা সেই রোগীর সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। ছিলেন আর এক সার্জেন ডাঃ সুমন দে, ডাঃ এটিএম সাইন, অজ্ঞানের চিকিৎসক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য ও অমিতাভ নন্দী।
ডাঃ সিদ্ধার্থ বিশ্বাস বলেন, ওই রোগীর বগলে ক্যান্সার আক্রান্ত জায়গা কেটে বাদ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে লেভেল অ্যাক্সিলারি লিম্ফ নোডাল কেটে বাদ দেওয়া হয়। যেটা ল্যাটিসিমাস ডরসি পেশি সরবরাহকারী প্রধান শাখা। পরে রোগীর পিঠ থেকে ল্যাটিসিমাস ডরসি ফ্ল্যাপ এবং পা থেকে ত্বকের গ্রাফ্টের সাহায্যে বাম পাঁজর ও বগলে বসানো হয়। তিনি বলেন, ফ্ল্যাপ দেওয়ার সুবিধা হল, আলসার আর বিকশিত হবে না এবং রেডিও থেরাপি তিনি অনেক ভালোভাবে সহ্য করতে পারবেন। প্রায় ছ’ঘণ্টা রোগীকে অজ্ঞান রেখে এধরনের জটিল অপারেশন এই হাসপাতালে প্রথম হল।
রোগীর ছেলে আজারুল শেখ বলেন, এই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা যেভাবে অস্ত্রোপচার করে বাবাকে সুস্থ করে তুললেন তাতে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।
রোগী কল্যাণ সমতির সভাপতি তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চিকিৎসকরা যেভাবে একের পর এক জটিল রোগের সফল অস্ত্রোপচার করছেন তাতে আমরা কৃতজ্ঞ।