গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, নতুন আধার কার্ড বহুদিন ধরে আর হচ্ছে না। শুধু সংশোধনের কাজ হচ্ছে। সেজন্য ফর্ম নিতে লম্বা লাইন হচ্ছে। হেড পোস্ট অফিস থেকে লাইন এফসিআই গোডাউন কলোনি পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। ফলে আগের দিন বা মাঝরাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও সারাদিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষজন। আধার কার্ড সংশোধনের ফর্ম পেতেই কালঘাম ছুটছে। দিনের পর দিন হন্যে হয়ে ঘুরছেন মানুষজন। ফর্মের জন্য মঙ্গলবার সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাগরদিঘির মহিপাল গৌরীপুরের মানারা বিবি। এদিন তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। এখনও ফর্ম পাইনি।
রঘুনাথগঞ্জের রানিনগরের মোস্তফা শেখ বলেন, ভোররাত থেকে বাড়ির মহিলারা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ৩-৪হাজার মানুষ ফর্মের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে। অথচ আধার সংশোধনের কাজ চলছে খুব ঢিমেতালে। প্রতিদিন ২০জনের সংশোধন হচ্ছে। পোস্ট অফিসে এই কাজে আরও কর্মী নিয়োগ করা উচিত। কারণ, এনআরসি আতঙ্কে ভুগছেন সবাই। সাধারণ মানুষকে সংশোধনের সুযোগ না দেওয়া হলে পরে মানুষই সমস্যায় পড়বে। জঙ্গিপুরের লালখাঁন দিয়ারের বাসিন্দা মরিয়ম বিবি বলেন, বিড়ি বানিয়ে সংসার চালাই। বর্তমানে পেনশনের আওতাভুক্ত, অথচ আধারে বয়স ভুল থাকায় পেনশনের সুবিধা পাচ্ছি না। দু’বছর ধরে হন্যে হয়ে ঘুরেও আধার কার্ড সংশোধন করতে পারিনি। তারপর সঠিক প্রমাণপত্রের অভাবে আধার কার্ড সংশোধন করাও যাচ্ছে না। কাজ কামাই হচ্ছে। বারবার দুর্ভোগে পড়ছি।
জঙ্গিপুর মুখ্য ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, আধারের কাজ এভাবেই চলবে। কারণ এব্যপারে পোস্ট অফিসের কিছু করার নেই। যা করার ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষ করবে। জঙ্গিপুর হেড পোস্ট অফিসের আধার সংশোধনের দায়িত্বে থাকা কর্মী পিএ আসারুল হক বলেন, একটি ফর্ম সংশোধনের জন্য সিস্টেম অনুযায়ী অন্তত ৪০ মিনিট সময় লাগে। ফলে দিনে দশটির বেশি ফর্ম দেওয়া বা নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। তার উপর মেশিন বা ইন্টারনেটের লিঙ্ক বিভ্রাট তো আছেই। ডাকঘরের ২৬জন কর্মীর কাজ ১৬জনে করতে হয়। অন্যান্য কাজ আছে, তার উপর আধারের কাজ করতে হচ্ছে। উপর মহল একটিমাত্র মেশিন বরাদ্দ করেছে, কাজেই এই সিস্টেমের বাইরে কোনও কিছুই করা যাবে না। কারণ সমস্ত কাজটাই হয় অনলাইনে।
দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে এদিন ফর্ম পেয়েছেন সখিনা বিবি ও মাম্পি খাতুন। তাঁরা বলেন, আমাদের আগামী বছর মার্চে মাসে সংশোধনের দিন পড়েছে। কারও আবার ২০২১সালের মার্চে দিন পড়ছে। সাবেরা বেওয়া বলেন, এতদিন ফর্ম ঠিক করে রাখাই তো সমস্যার। নিজেদের কাজকর্ম ফেলে রেখে এসব নিয়ে পড়ে থাকতে হবে। সবাই বলছে, দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে। কিন্তু কাদের তাড়াবে, কীভাবে তাড়াবে সেসব নিয়ে আতঙ্ক হচ্ছে।