কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ওই বৃদ্ধার প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধার স্বামী বহু বছর আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের বিয়েও হয়ে গিয়েছে। বছর দুয়েক আগে সম্পত্তি ছেলেমেয়েদের নামে ভাগ করেও দিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। এরপরই বৃদ্ধার কপালে দুর্ভোগ নেমে আসে। প্রায় দু’বছর ধরে ওই বৃদ্ধার ছেলেরা দেখাশোনা করতেন না বলে অভিযোগ। এমনকী, তিনি নিজের বাড়িতেও ঠিকমতো থাকতে পারতেন না। কখনও বাড়ির বাইরে, কখনও থাকতেন মেয়ে সান্ত্বনা বিবির কাছে। বাড়িতে থাকলে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ। বউমারা তাঁকে ঠিকমতো খেতেও দিতেন না বলে অভিযোগ।
এরপর ওই বৃদ্ধা প্রথমে বড়ঞা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিসি হস্তক্ষেপেও কোনও সুরাহা হয়নি। এরপর মাস তিনেক আগে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর বাকি জীবনের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। পরে মহকুমা শাসকের কাছে বিষয়টির তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ আসে নবান্ন থেকে। মহকুমা শাসক বলেন, নবান্নের নির্দেশ পাওয়ার পর আমরা ওই বৃদ্ধার অভিযোগের তদন্ত শুরু করি। বৃদ্ধার চার ছেলে থাকা সত্ত্বেও কেউ তাঁর সেবাযত্ন করতেন না। এমনকী মেয়েরাও তাঁকে দেখতেন না। এমন অবস্থায় আমরা ওই বৃদ্ধার ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলি। তাঁদের আইনি দিক বলে বোঝানো হয়। এরপর ওই বৃদ্ধা যাতে শেষ জীবনে কষ্ট না পান তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ফের ওই বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলেমেয়েদের মহকুমা শাসকের অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। বৃদ্ধার চার ছেলেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিমাসে তাঁদের ১-৭ তারিখের মধ্যে প্রত্যেককে দেড় হাজার টাকা করে বৃদ্ধার অ্যাকাউন্টে জমা করতে হবে। তিন মেয়েকে দু’মাস অন্তর নিজেদের কাছে রেখে দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মহকুমা শাসকের সামনে বৃদ্ধার ছেলেমেয়েরা সেই নির্দেশ মেনে নেন। এব্যাপারে ওই বৃদ্ধা জানান, দু’বছর ধরে আমার অবস্থা খুব শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। একজনের পরামর্শে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ও এসডিও সাহেবের সাহায্যের জন্য আমার জীবনের বাকি দিনগুলি ভালোভাবে কাটবে বলে আশা করছি।
বৃদ্ধার বড় ছেলে শাহ আলম বলেন, মাকে দেখাশোনা করতাম না, এটা ঠিক নয়। তবুও মা যখন নিজে থেকে এভাবে থাকতে চাইছেন সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই। বৃদ্ধার মেয়ে সান্ত্বনা বিবি বলেন, দাদারা মাকে না দেখায় আমার কাছে এতদিন ছিল। প্রশাসনের এই সমাধানে আমরা সকলেই খুশি।