কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এটা অভিনব। গত বছর আমাদের জেলায় বর্ধমান শহরে মিউনিসিপ্যাল স্কুলে চালু করেছি। এবার গোটা জেলাজুড়েই একাধিক প্রাইমারি স্কুলে এই ইংরেজি মাধ্যম চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। সেই মতো প্রস্তুতি চলছে। এব্যাপারে জেলার সমস্ত সার্কেলের এসআইদের প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। কারণ, প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করতে গেলে স্কুলে সঠিক পরিকাঠামো থাকতে হবে। সেইসঙ্গে দক্ষ ও পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারও প্রয়োজন রয়েছে। সেগুলি যেখানে যেখানে সঠিকভাবে রয়েছে এবং যে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ইংরেজি মাধ্যম চালু করতে আগ্রহী রয়েছে, তাদের কাছ থেকে প্রস্তাব নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমাদের কাছে প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। মঙ্গলবারই বর্ধমান শহরের একটি প্রাইমারি স্কুল এব্যাপারে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তবে, শুধু শহর নয়, আমরা জেলার গ্রামীণ এলাকার উপরেও বিশেষ জোর দিচ্ছি। সার্কেল থেকে যে সব প্রস্তাব আসছে, সেগুলি অনুমোদনের জন্য রাজ্যের কাছে দ্রুত পাঠানো হবে। যাতে আগামী শিক্ষাবর্ষেই আমরা তা চালু করতে পারি।
প্রসঙ্গত, পূর্ব বর্ধমান সহ গোটা রাজ্যের কয়েক হাজার প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী চালু হচ্ছে। তারই মধ্যে ইংরেজি মাধ্যম চালু হওয়ার উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অভিভাবকরা। কারণ, এই ব্যবস্থার ফলে, জেলার কয়েক হাজার গরিব সাধারণ ছাত্রছাত্রী উপকৃত হবে।
শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক প্রাথমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষার উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তাই পূর্ব বর্ধমান সহ গোটা রাজ্যের সাধারণ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকেও ‘শিশু আলয়’ নাম দিয়ে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। খেলার ছলে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে শিশুর পছন্দের ক্লাস রুম। একইভাবে প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামোরও উন্নয়ন করা হচ্ছে। প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা করে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। কারণ, সরকারি প্রাইমারি স্কুলে বেশিরভাগ জায়গায় গরিব সাধারণ পরিবারের ছাত্রছাত্রীরাই পড়াশোনা করে।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২হাজার ৯৮৩টি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। গত বছর বর্ধমান শহরে মিউনিসিপ্যাল স্কুলের প্রাইমারি বিভাগে ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হয়েছিল। শিক্ষাদপ্তরের দাবি, তাতে সফলতা মিলেছে। তাই এবার সারা জেলাতেই বিভিন্ন জায়গায় প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তরফে প্রতিটি চক্রকে বলা হয়েছে, কোন কোন প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করা যেতে পারে তার তালিকা তৈরি করতে। চক্র থেকেই জেলা বিদ্যালয় সংসদকে তার প্রস্তাব পাঠাতে হবে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জেলা থেকে সেই প্রস্তাব পাঠানো হবে রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের কাছে। সেখান থেকে অনুমতি মেলার পরই আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে অর্থাৎ নতুন বছরের জানুয়ারি থেকেই চালু হয়ে যাবে ইংরেজি মাধ্যম। সেই মতো জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদও প্রস্তুতি শুরু করেছে। গ্রামীণ এলাকার প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে শিক্ষা দপ্তর। তাদের দাবি, শহরাঞ্চলে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু, গ্রামীণ এলাকায় সেই সুযোগ থেকে সকলকেই বঞ্চিত হতে হয়। তাই শহরাঞ্চলের সঙ্গে গ্রামীণ এলাকাকেও এবার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। যাতে গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও কোনওভাবে বঞ্চিত না হয়।