পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোবা গ্রামের বাসিন্দা চায়না দাসের বাড়ির সীমানা প্রাচীরের মাটির নীচ থেকে ওই ধোঁয়া বেরতে থাকে। গত তিনদিন ধরে ওই জায়গায় ধোঁয়া বেরতে দেখেন বাসিন্দারা। এদিন সকালে ফের তা দেখতে পাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পরে দমকল ও পুলিস যায়। এমনকী, দুবরাজপুর ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের একটি দলও সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক দল সেখানে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। পরে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকেও খবর দেওয়া হয়। মাটির নীচে যে জায়গা থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখা যায় সেখান থেকে সংলগ্ন জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। প্রথমে শর্ট সার্কিটের জেরে এই ঘটনা হচ্ছে বলে অনেকে অনুমান করেন। কিন্তু, সেই তত্ত্ব মানতে নারাজ বাসিন্দারা। বিজ্ঞান মঞ্চের একটি দলও ঘটনাস্থলে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, আমার বাড়ির সামনে এদিন সকালে ওই ধোঁয়া বেরতে দেখে প্রশাসনকে খবর দিয়েছি। ধোঁয়ার পাশাপাশি সেটি রহস্যজনক গ্যাস বলেও মনে হয়েছে। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি গেলে ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। তিনদিন ধরে এই ধোঁয়া বেরতে থাকলেও প্রথমে বোঝা যায়নি। এদিন বিষয়টি নজরে এসেছে। যে জায়গা থেকে ওই ধোঁয়া বেরচ্ছে সেই জায়গাটি বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে ওই ধোঁয়ার তীব্রতা কিছুটা বেশি ছিল। তার জেরে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফলে, প্রশাসনের তরফে প্রথমে ধোঁয়া বেরনো সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেইমতো প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায়। পরে অবশ্য পুলিস ও দমকলের প্রতিনিধিরা এসে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন।
দুবরাজপুরের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় বলেন, এদিন সকালে ধোঁয়া বেরনোর খবর পেয়ে আমরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি সেখানে যান। দুপুরের পরে ওই জায়গা থেকে ধোঁয়া বেরনো বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা নজর রাখছি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, লোবায় উন্নতমানের কয়লা রয়েছে। সেই কয়লা উত্তোলনের জন্য ডিভিসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনও উত্তোলনের কাজ শুরু হয়নি। তাই মাটির নীচে কয়লা রয়েছে বলে মিথেন জাতীয় গ্যাস বেরতে পারে। ওই ধোঁয়া বা গ্যাস থেকে কটূ গন্ধও পেয়েছেন বাসিন্দারা। গ্যাস বেরনোর ফলে বিপদের আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
এপ্রসঙ্গে দুবারজপুরের বিডিও বলেন, মিথেন জাতীয় গ্যাস বেরনোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সেইজন্য নিশ্চিত হতে পরীক্ষা করে দেখা হবে।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য শুভাশিস গড়াই বলেন, যে সময় প্রতিনিধিরা সেখানে গিয়েছিলেন তখন কোনও গ্যাস বা ধোঁয়া বেরতে দেখা যায়নি। তবু আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।
শান্তিনিকেতনের ভূতত্ত্ববিদ উর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, লোবার ওই এলাকায় মাটির নীচে কয়লা রয়েছে বলে চিহ্নিত হয়েছে। তাই সেখানে গ্যাস থাকা স্বাভাবিক। কোনওভাবে সেই গ্যাসই বাইরে বেরচ্ছে। এক্ষেত্রে আতঙ্কের কোনও ব্যাপার নেই। প্রশাসন এব্যাপারে পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নিক।