গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ির লবাগানে এক আদিবাসীপাড়ায় ওই রাতে এক বাসিন্দার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তাতে বাড়িটি ভস্মীভূত হয়ে যায়। পরে দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনার পরে ফের সেখানে পৃথক একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিসও যায়।
বুধবার সকালে বিজেপির কয়েকজন কর্মী ওই গ্রামে খবর নিতে যাচ্ছিলেন। সেইসময় কোমা পঞ্চায়েত কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ওই কর্মীদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি বিজেপি কর্মীদের তিনটি বাইকেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে সিউড়ি থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পাশাপাশি ভাঙচুর হওয়া বাইকগুলিও উদ্ধার করে নিয়ে আসে। বিজেপির অভিযোগ, কর্মীদের কাছে থাকা মোবাইলগুলিও নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনায় অগ্নিসংযোগ হওয়া দুই আদিবাসীর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলে। তৃণমূলের সিউড়ি-২ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, লবাগানের বাসিন্দা সুরেন্দ্র বাস্কি ও সুমি বাস্কি আমাদের কর্মী। সুরেন্দ্রকে কিছুদিন আগেই সেখানকার গ্রাম্য কমিটিতে রাখা হয়েছে। তার জেরে বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতীরা ওই দুই কর্মীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। দুই কর্মীর বাড়ি আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। তাঁরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন।
অন্যদিকে বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ওই গ্রামে আমাদের দলের এসটি মোর্চার মণ্ডল সভাপতির বাড়ি। তৃণমূলের লোকেরাই ওই রাতে দুই বাসিন্দার বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। এছাড়া এদিন তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মীদের বাইক ভাঙচুর করে তাঁদের বেধড়ক মারধর করেছে। জেলায় আদিবাসী মানুষের উপরও তৃণমূল অত্যাচার করছে।
অন্যদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত সুরেন্দ্র বাস্কি বলেন, ওই রাতে ভাটায় কাজ থেকে ফিরে আমি বাড়িতে শুয়েছিলাম। সেইসময় হঠাৎ করে স্ত্রী পোড়া গন্ধ পায়। তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসি। বাড়িটির সমগ্র অংশই পুড়ে যায়। কিছু সামগ্রী বের করতে পেরেছিলাম। বাকি অধিকাংশ জিনিসই পুড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, আমি তৃণমূল কর্মী। সেই আক্রোশেই বিজেপির লোকেরা বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
বিজেপির সিউড়ির যুব নেতা গোপাল ঘোষ বলেন, ওই দুই বাসিন্দা আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। তাঁদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এদিন কয়েকজন কর্মী গিয়েছিলেন। লবাগান থেকে ফেরার পরে কোমা পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা পথ আটকে বেধড়ক মারধর করে। তাঁরা প্রাণভয়ে কোনওভাবে সেখান থেকে চলে আসেন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের কোমা অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদি বলেন, ওই দুই ক্ষতিগ্রস্তকে জোর করে বিজেপিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, তা না যাওয়ায় চক্রান্ত করে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এদিন সকালে বিজেপির লোকেরা সাধারণ মানুষকে প্ররোচনা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। সেই সময় জনরোষে তাদের বাইক ভাঙচুর হয়েছে।
সিউড়ি থানার এক আধিকারিক বলেন, এই ঘটনায় রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পৃথক দু’টি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সন্দেহভাজন দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত ওই দুই পরিবার এদিন বিডিও অফিসে যায়। সেখান থেকে তাদের ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়েছে বলে সুরেন্দ্র বাস্কি জানিয়েছেন।