গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
শহরের বিভিন্ন নর্দমার নোংরা জল সাতটি বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে চূর্ণী নদীতে এতদিন ধরে পড়ছে। সেই জলকেই সুয়ারেজ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের সাহায্যে পরিস্রুত করে নদীতে ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। শহরের বাসিন্দারা বলেন, এই প্রজেক্ট চালু করা গেলে নদীর দূষণ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। রানাঘাট শহরের গা ঘেঁষে চলে গিয়েছে চূর্ণী নদী। আর এই নদীর দূষণ নিয়ে একাধিক পরিবেশ প্রেমী সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, চূর্ণী নদীতে এতদিন সরাসরি নর্দমার যে জল পড়ছিল, তা ট্রিটমেন্ট করে ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এই প্রজেক্টটি সম্পূর্ণ করতে কত টাকা খরচ হবে তা এই মুহূর্তে বোঝা যাচ্ছে না। কেএমডিএ রূপরেখা তৈরি কাজ সম্পন্ন করলে আমরা খরচ সম্পর্কে ধারণা পেতে পারব।
হাঙর খাল, ছোটবাজারঘাট, চুড়িপাড়াঘাট সহ শহরের সাতটি পয়েন্ট দিয়ে নর্দমার দূষিত জল নদীতে নিয়মিত পড়ছে। কয়েক মাস আগে নর্দমাগুলির মুখে নেট লাগিয়ে প্লাস্টিকের প্যাকেট বা অন্য আবর্জনা নদীতে পড়া আটকানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। তারপরই পুরসভা ট্রিটমেন্ট প্লান্টের চিন্তাভাবনা করে। এই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু করা গেলে দূষিত জল নানা ধরনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিস্রুত হয়ে নদীর জলে ফেলা হবে। এতে কমবে চূর্ণী নদী দূষণ। পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ, চূর্ণী নদী সারা বছরই দূষিত হয়ে থাকে। মাঝেমধ্যেই দূষণের মাত্রা বেড়ে জলের রং কালো হয়ে যায়।
বাংলাদেশ থেকে নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ হয়ে এদেশে প্রবেশ করেছে মাথাভাঙা নদী। এই নদী গোবিন্দপুর হয়ে পাবাখালি এসে দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটি ইছামতী নদী এবং অন্যটি চূর্ণী নদী। ইছামতী নদী উত্তর ২৪ পরগনার দিকে গিয়েছে। আর এই চূর্ণী নদী হাঁসখালি, রানাঘাট ১, রানাঘাট ২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে গিয়ে পায়রাডাঙার কাছে ভাগীরথী নদীতে মিশেছে। এই নদীর উৎস স্থল মাথাভাঙা।
পরিবেশ কর্মীদের সংগঠনের অভিযোগ, বাংলাদেশের দর্শনায় একটি চিনিকল রয়েছে। সেই চিনিকলে উৎপাদনের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে তিনমাস নিত্যদিন কারখানার বর্জ্য পদার্থ ফেলা হয়। সেখানকার দূষিত জল চূর্ণী নদীতে মিশে যাচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে পরিবেশ কর্মীদের বহু আন্দোলন হলেও তা বন্ধ হয়নি। তার ওপর রানাঘাট পুরসভার সহ বেশ কয়েকটি এলাকার দূষিত জল সরাসরি ফেলা হচ্ছে চূর্ণী নদীতে। ফলে সারা বছর নদী দূষণের পরিমাণ একইরকম থেকে যাচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, এই নদীতে আগে বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর মাছ দেখতে পাওয়া যেত। এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। বহু মৎস্যজীবী অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তার উপর নদীর বিভিন্ন জায়গায় কচুরিপানা থাকায় নদীতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণীর সমস্যা বেড়েছে। এবার নদীকে দূষণমুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে পুরসভা। শহরের দূষিত জলকে যাতে আর নদীতে ফেলতে না হয়, তাই এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।