বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
টিআরডিএর ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, তারাপীঠে মন্দির ছাড়া পর্যটকদের মনোরঞ্জনের কোনও ব্যবস্থা নেই। সেই দিক চিন্তা করেই দ্বারকার পাড় সৌন্দর্যায়ন করা হচ্ছে। চতুর্দিকে গাছ ও আলো লাগিয়ে ঝকঝকে করে তোলা হবে। সেইসঙ্গে হরিদ্বারের আদলে দ্বারকার পাড়ে আরতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দ্বারকা নদে বোটিংও করতে পারবেন পর্যটকরা। জোরকদমে সেই কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, মাস চারেকের মধ্যে পরিকল্পনা বাস্তব রূপ পাবে।
দ্বারকা নদের পাশে তারা মায়ের প্রাচীন মন্দির। গায়ে নিখুঁত টেরাকোটার কাজ। পরিকাঠামো ঠিকমতো গড়ে না ওঠায় ঘিঞ্জিতে পরিণত হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মূল মন্দিরকে অক্ষত রেখে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। যার প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। এতে কংক্রিটের জঙ্গল সরিয়ে মন্দির চত্বরে খোলামেলা পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
এদিকে দ্বারকা নদের দূষণ নিয়ে বেশ কয়েকমাস আগে পরিবেশ আদালতে একটি মামলা হয়। বলা হয়, বিভিন্ন লজ ও হোটেলের আবর্জনা, নোংরা জল দ্বারকা নদে ফেলা হচ্ছে। এতে জল যেমন দূষিত হচ্ছে, তেমনি নদীর গভীরতা কমে আসছিল।
এখানে দ্বারকা উত্তরবাহী। তাই গঙ্গার সঙ্গে তুলনা করা হয়। মায়ের নিত্যপুজোও হয় এই দ্বারকার জলে। অনেকে দ্বারকায় স্নান করে মায়ের কাছে পুজো দেন। কিন্তু, দূষণ আর জল না থাকায় ভক্তরা নিরাশ হচ্ছিলেন। অবশেষে আদালতের নির্দেশে টিআরডিএর উদ্যোগে সেই নদে খননকার্য চালিয়ে গভীরতা বাড়ানোর পাশাপাশি চেকড্যাম নির্মাণ করে। যাতে ১২মাস মন্দিরের পাশ দিয়ে যাওয়া নদে জল থাকে। নদে আবর্জনা ফেলাও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে টিআরডিএ।
এবার সেই দ্বারকার পাড়কে হরিদ্বারের আদলে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে জোরকদমে। প্রথম পর্যায়ে ১৭৫মিটার পাড় জুড়ে সৌন্দাযরায়ন করার কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে আরতির জায়গা যেমন করা হচ্ছে, তেমনি ভক্তদের বসার জায়গাও হচ্ছে। করা হচ্ছে স্টল। যেখানে উৎসাহীরা স্টল ভাড়া নিয়ে আরতির সামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন। নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অন্যদিকে শববাহী যাত্রীদের জন্য লাগোয়া বামদেব ঘাটের কাছে পৃথক ফুটব্রিজ নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের দিকে। যাতে আরতি শেষে ভক্তরা খুব সহজেই শ্মশান দর্শনে যেতে পারেন। ঠিক উল্টো দিকে দ্বারকার পাড়ে বিশ্ববাংলা ঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। যাত্রীরা এই ঘাটে বসেও আরতি দেখতে পাবেন।
মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, তারাপীঠকে আন্তর্জাতিক মানের তীর্থক্ষেত্র করে তুলতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে টিআরডিএ যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা অকল্পনীয়। তিনি বলেন, বারাণসী ও হরিদ্বারে গঙ্গার পাড়ে আরতি হয়। দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ সেই আরতি দেখতে ভিড় জমান। এখানেও উত্তরবাহী দ্বারকা নদে আরতির ব্যবস্থা হলে তারাপীঠ আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে বামাখ্যাপার এই সাধনাস্থলে ভক্ত সমাগম কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।