বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কৃষি বিপণন দপ্তরের বীরভূম জেলা আধিকারিক অচিন্ত্য থোকদার বলেন, এদিন সব জায়গাতেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। জোগানও স্বাভাবিক রয়েছে। সিউড়ির স্টলে সেইসময় পেঁয়াজ ছিল না বলে বন্ধের পোস্টার দিয়েছিল। কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য পেঁয়াজ বিক্রি স্বাভাবিক হয়। পোস্টারটিও খুলে দেওয়া হয়েছে।
অগ্নিমূল্য পেঁয়াজের জন্য জেলাজুড়ে এখনও হাহাকার চলছে। বোলপুর, সিউড়ি, আহমদপুর, রামপুরহাট, তারাপীঠ প্রভৃতি জায়গায় রাজ্য সরকারের তরফে সুফল বাংলা স্টল খোলা হলেও গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের পেঁয়াজ কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে। খোলা বাজারে জেলার বিভিন্ন জায়গায় পেঁয়াজের দাম এদিন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ছিল। সুফল বাংলা স্টলে সরকার ভর্তুকিতে ৫৯টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। তাই বাসিন্দারা প্রত্যেকটি স্টলে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনছেন। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী স্টলগুলিতে জন প্রতি এক কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রির কথা। কিন্তু জেলায় বিভিন্ন স্টলে ক্রেতাদের ৫০০ গ্রাম করে তা বিক্রি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও দপ্তরের দাবি, এক কেজি করেই বিক্রির জন্য বলা হয়েছে।
মঙ্গলবারও জেলার প্রত্যেকটি সুফল বাংলা স্টলে পেঁয়াজ কেনার জন্য ক্রেতাদের লম্বা লাইন ছিল। এদিন সিউড়িতে ক্রেতারা পেঁয়াজের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। পরে সেখানে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ বলে একটি পোস্টার সাঁটানো হয়। তার জেরে ক্রেতারা ফিরে যান। পরে সিউড়ি থানার পুলিস গিয়ে সরেজমিনে প্রক্রিয়া দেখে আসে। পুলিস সূত্রে খবর, পেঁয়াজের জোগান ছিল না বলে ক্রেতাদের তা দেওয়া হয়নি। তাই কর্তৃপক্ষের তরফে পোস্টার দেওয়া হয়। যদিও বিষয়টি জানাজানি হতেই পেঁয়াজের জোগান স্বাভাবিক করা হয়।
অন্যদিকে, এদিন বোলপুরের সুফল বাংলা স্টলে পুলিসি নিরাপত্তা থাকার ফলে সুষ্ঠুভাবেই পেঁয়াজ বিক্রি চলেছে। সোমবার পেঁয়াজ লুটের পর স্টলের কর্মীরা নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিস মোতায়েনের আর্জি জানান। দপ্তরের তরফে ওইদিন বোলপুর থানাতেও অভিযোগ জানানো হয়। সেইমতো এদিন সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই খুশি।
দুই কনস্টেবল ও চারজন সিভিক ভলান্টিয়ার নিরাপত্তার জন্য স্টলগুলিতে নিযুক্ত করা হয়েছে। তবে রামপুরহাটে ক্রেতাদের আড়ালে অনেক হোটেলের কর্মীদের পেঁয়াজ কেনার জন্য লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেখানে জন প্রতি এক কেজি করে পেঁয়াজ ৫৯ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে হোটেলের একাধিক কর্মী লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কেনেন। এর জেরে সাধারণ ক্রেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও এব্যাপারে দপ্তরের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি বলে দাবি।
বোলপুরের স্টলের এক কর্মী বলেন, সোমবারের ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত বোধ করছিলাম। কিন্তু এদিন থেকে নিরাপত্তা দেওয়ায় অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছি।
এক ক্রেতা ফারুক আহমেদ বলেন, আগে কখনও স্টলে পুলিস দেখিনি। তাই প্রথমে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। পরে ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছি। প্রশাসন খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। সিউড়ির এক ক্রেতা চম্পা বিবি বলেন, সব্জি ও পেঁয়াজ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু পোস্টার দেওয়া রয়েছে বলে পেঁয়াজ পাইনি। কীভাবে রান্না হবে জানি না।
জেলায় কয়েকটি এলাকায় সুফল বাংলা স্টল থাকলেও দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া প্রভৃতি শহরে তা নেই। ফলে সেখানকার বাসিন্দারাও বিপাকে পড়েছেন। বিভিন্ন হোটেলে খাবারের দামও বেড়েছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতাও সেভাবে নেই। সাঁইথিয়া শহরে পেঁয়াজের আড়ত থাকলেও সেখানে তার দামও আকাশছোঁয়া। তাই ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। সাঁইথিয়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার গোপীনাথ চক্রবর্তী বলেন, সুফল বাংলা স্টল করার জন্য জায়গা পাওয়া যায়নি। তাই নির্মাণ হয়নি। তবে মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে এখানেও একটি স্টল করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় মানুষ কিনতে পারছেন না।