রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, খাদ্য দপ্তর থেকে ধান কেনার ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারির বিষয়ে চিঠি এসেছে। গত বছর বেশ কিছু ক্ষেত্রে ফড়েরা চাষি সেজে সরকারি কেন্দ্রে ধান বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক ব্যক্তিদের টাকা আটকে দেওয়া হয়। ঘটনায় জড়িত রাইস মিলকে এবার ধান সংগ্রহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এবার ১নভেম্বর থেকে ধান কেনার কথা বলা হলেও দুর্নীতি রুখতে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরকে নিয়ে বার বার সমন্বয় বৈঠক করা হয়েছে। সেজন্য ধান কেনা শুরু করতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এবার গোটা প্রক্রিয়ায় কোনও রকম দুর্নীতি যাতে না হয়, গরিব চাষিরা যাতে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন তার জন্য কড়া নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দুর্নীতির ঘটনা ঘটলে জড়িত ব্যক্তি অথবা সংস্থাকে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এবিষয়ে বুধবার সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরকে নিয়ে সমন্বয় বৈঠক ডাকা হয়েছে।
খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যে মোট ২৯১টি এবং বাঁকুড়ায় ১৯টি কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র(সিপিসি) খোলা হয়েছে। এছাড়াও সমবায় ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে সহায়ক মূল্যে ধান সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবারে সহায়ক মূল্যে কুইন্টাল পিছু ধানের দর ১৮১৫টাকা স্থির করা হয়েছে। গত বছর তা ছিল ১৭৫০টাকা। এবার প্রতি কুইন্টালে ৬৫টাকা বাড়ানো হয়েছে। এমনকী সিপিসিতে ধান বিক্রি করলে চাষিরা কুইন্টাল পিছু অতিরিক্ত ২০টাকা ইনসেনটিভ পাবেন। এবার জেলায় সাড়ে ৩ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সহায়ক মূল্যে কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে যাতে সহায়ক মূল্যে ধান সংগ্রহ করা যায় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে ধান কেনার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও তা শুরু হয়নি। এদিকে গত বছর বেশ কিছু জায়গায় ফড়েরা চাষিদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে তা সিপিসিতে সহায়ক মূল্যে বিক্রি করার অভিযোগ ওঠে। কিছু ক্ষেত্রে সমবায় সমিতি ও সংশ্লিষ্ট রাইস মিলের মালিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ভুয়ো শিবির করে ধান কেনার অভিযোগ উঠেছে। খাদ্য দপ্তরের পোর্টালে প্রচুর সংখ্যক ভুয়ো চাষির নাম ঢোকানো হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। গত বছরই বিষয়টি নজরে আসে। কিন্তু ততদিনে বহু ধান কেনা হয়ে যায়। তাই এবারেও যাতে একই ঘটনা না ঘটে তার জন্য ধান কেনার শুরু থেকেই বিশেষ নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি খাদ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি মনোজ কুমার আগরওয়াল ওই বিষয়টি উল্লেখ করে বাঁকুড়ার জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে জেলা প্রশাসন, সমবায় ও খাদ্য দপ্তরকে এক যোগে বিশেষ নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
বিষ্ণুপুরের এক চাষি গোবর্ধন ঘোষ বলেন, গত বছর আমাদের এলাকায় সরকারিভাবে ধান কেনার শিবির করা হয়েছিল। কিন্তু সবাইকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফড়েদের ধানেই সরকারের কোটা কার্যত পূরণ হয়ে গিয়েছিল। সরকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কথা ভেবে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার শিবির করলেও বাস্তবে তার সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন না। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মদতে ফড়েরা রাজ চালিয়েছে। তা বন্ধ করতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিলে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে।