বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মৃতদেহ আসার আগে থেকেই গ্রামের উৎসুক জনতা তাঁর অপেক্ষা করছিলেন। শোকাহত গোটা পরিবার। একনজর দেখার জন্য রাস্তার দু’ধারে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষায় ছিলেন সাধারণ মানুষ। গ্রামের ছেলের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, মাসুর মতো শান্ত স্বভাবের ছেলে এমন কাজ করতে পারে না। মাসুদুলের ছোটভাই মাজারুল শেখ বলেন, আমি আমার ভাইকে খুব ভালো করে চিনি। আমি নিজে সাহেবদের সঙ্গে কথা বলেছি। একটাও কোনও খারাপ রিপোর্ট নেই আমার ভাইয়ের। সবকিছুতে এক নম্বর ছিল। খেলাখুলা থেকে শ্যুটিং। আমাকে জানিয়েছিল, ছুটিতে বাড়ি আসছে। কিন্তু আমরা খবর পেলাম আমার ভাই সবাইকে মেরে আত্মঘাতী হয়েছে। আমরা মৃতদেহ দেখে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার ভাই বাড়ি আসার জন্য তৈরি হচ্ছিল। রাইফেলও জমা দিয়েছিল। ছুটি মঞ্জুর হয়ে গিয়েছিল। তারপর এই ঘটনা কীভাবে ঘটতে পারে? নিজে যদি আত্মহত্যা করত তাহলে পিছনের দিকে গুলি লাগত কি? যে কারও সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলত সে এমন কাজ করতেই পারে না।
ওই জওয়ানের মেজো দাদা মিজানুর রহমান বলেন, পিছন থেকে কীভাবে গুলি লাগলো। ওকে পিছন থেকে খুন করা হয়েছে, তা আমরা মৃতদেহ দেখে বুঝতে পারছি। শরীরের যেভাবে গুলির দাগ রয়েছে ও পাঁচজনকে মেরে আত্মহত্যা করেছে একথা ঠিক নয়। আমরা ঘটনার তদন্ত চাই। মিজানুরের ছোটবেলার বন্ধু আকতার হোসেন বলেন, আমি ছোট থেকেই ওকে খুব ভালো করে চিনি। ওর মতো ছেলে এই কাজ করতে পারে না। ওর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত গোটা গ্রাম। আমরা চাই, ওকে যথাযথ শহিদের সম্মান দেওয়া হোক।
এদিকে, এদিন সিআরপিএফের পক্ষ থেকে নিয়ম মেনে যথাযত মর্যাদায় গান স্যালুট দেওয়া হয়। যা দেখতে গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় জমান। পরিবার সদস্যরা বলেন, হাতের নীচে পাঁজরের হাড়ের পাশেই রয়েছে গুলির চিহ্ন। তাই নিয়ে আমরা নিশ্চিত এটা আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা নয়। সন্দেহের দানা বাঁধছে। আমরা চাই, সঠিক তদন্ত হোক। তা হলে গোটা ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এদিকে, ঘটনার পর গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবার মুখে একই কথা, মাসুদুলের মতো শান্ত ছেলে গ্রামে কেউ ছিল না। শান্ত, মিশুকে স্বভাবের মাসু যে পাঁচ সহকর্মী জওয়ানকে খুন করে আত্মঘাতী হতে পারে তা ভাবতেই পারছেন না বিলকুমারী গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দারা। বছর ২৮ এর মাসুদুল রহমানকে গ্রামে লোকজন মাসু বলেই ডাকত। অত্যন্ত ভদ্র, শান্ত মার্জিত ছেলে ছিল মাসুর। সে যে এমন ভয়াবহ কাণ্ড ঘটাতে পারে তা মেনে নিতে পারছে না গ্রামবাসীরা। তাই মৃতদেহ আসার পর ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে চাকরি পান তিনি। বাবা মারফত আলি অবসরপ্রাপ্ত পুলিস কর্মী। ঘটনার পর তাঁর পরিবারের লোকজনে ভেঙে পড়েছেন।