গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম জেলার একাংশে পেঁয়াজ সরবরাহ হয় সাঁইথিয়া থেকে। সাঁইথিয়ায় একাধিক বড় আড়তদার রয়েছেন। সেখানে ভিনরাজ্য থেকে ট্রাকে করে পেঁয়াজ আসে। ওই পেঁয়াজ মাঝারি আড়তদাররা গাড়ি করে ভিন জায়গায় নিয়ে আসেন। এক্ষেত্রে সিউড়ি, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, মুরারই, মুর্শিদাবাদ সহ অন্যান্য ব্লক সদরের বাজারের আড়তদাররাও নিয়ে যান। ব্যবসায়ীদের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ব্যবসায় টান পড়েছে।
সাঁইথিয়ার এক আড়তদার কাশীনাথ সাউ বলেন, এখানে সপ্তাহে দু’-তিনদিন কাঁচামাল পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র প্রভৃতি জায়গা থেকে আসে। কিন্তু, বর্তমানে বাজারের অবস্থা খারাপ হওয়ায় পেঁয়াজ কম নেওয়া হচ্ছে। আগে যে পরিমাণ কাঁচামাল নেওয়া হতো এখন তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানি প্রায় বন্ধই হতে বসেছে। পেঁয়াজ নিয়ে আসা হলেও আমাদের কাছ থেকে সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার পাইকারি ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, অনেক সময় পেঁয়াজ ঋণ দিয়ে বিক্রি করা হয়। কিন্তু, ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে কার্যত আতঙ্ক লাগছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজের ব্যবসা করা হলেও এ ধরনের বাজার কোনওদিন হয়নি। দামও এত চড়েনি। তাই সরকার যদি এ ব্যাপারে নজর দেয়, তাহলে বিক্রেতাদের পাশাপাশি ক্রেতারাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন।
পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির জেরে অনেকেই ব্যবসা কার্যত বন্ধ করে দিয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে তাঁরা মূল আড়ত থেকে পেঁয়াজ কিনছেন না। ফলে তাঁদের সংসারেও টান পড়ছে বলে দাবি। অন্যদিকে, ক্রেতারা বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের দাম শুনেই মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে, ছোট ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজ কেনা বন্ধ করেছেন।
সিউডির এক ব্যবসায়ী শ্রীবাস সরকার গত কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজ মজুত করেননি। তাঁর আড়ত এখন ফাঁকা। তিনি বলেন, বুধবার সাঁইথিয়ার পাইকারি বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের দাম শুনে কেনা হয়নি। এদিনও দাম ছিল ১০০ টাকা। তাঁর দাবি, এই আড়ত থেকে সিউড়ির ছোট ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যান। কিন্তু, অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির জেরে তা ছোট ব্যবসায়ীরা কিনছেন না। তাছাড়া বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ কিনে বিপাকেও পড়তে হতে পারে। পেঁয়াজ খুব বেশিদিন বস্তাবন্দি করে রাখলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে পেঁয়াজ কেনায় রাশ টানা হয়েছে।
সিউড়ির আর এক ব্যবসায়ী টুটুল স্বর্ণকার বলেন, খুব ছোটবেলা থেকে পেঁয়াজের ব্যবসা করছি। কিন্তু, এরকম অবস্থা কোনওদিন হয়নি। গত পাঁচদিন ধরে পেঁয়াজের আমদানি করিনি। তাই এখন আড়ত ফাঁকা। দাম না কমা পর্যন্ত পেঁয়াজ আর আনা হবে না। তিনি বলেন, বাজারে যে পরিমাণ ছোট ব্যবসায়ী পেঁয়াজ রাখতেন, তাঁদের অর্ধেকের বেশি বিক্রেতা তা রাখেননি। ফলে, বাজারে অন্য আনাজের ক্রেতা থাকলেও পেঁয়াজের দাম জিজ্ঞাসা করেই তাঁরা চলে যাচ্ছেন।