দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের বসুধা গ্রামের বাসিন্দা লক্ষণ ঘোষ ২০১৬ সালে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে চক্ষু ও দেহদানের অঙ্গীকার করেন। পেশায় ব্যবসায়ী হলেও সমাজসেবামূলক কাজে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। শনিবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান লক্ষণবাবু (৬২)। লক্ষণবাবুর তিন মেয়ে। খবর পেয়ে বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণে আরজিকর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রুমা, মৌসুমি ও তনুশ্রী।
লক্ষণবাবুর বড় মেয়ে রুমা ঘোষদাস জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজের খরচায় কলকাতায় আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য বলে। এমনকী, ছ’ঘণ্টার মধ্যে দেহ পৌঁছনো চাই। কিন্তু, এতটা রাস্তা ও কলকাতার যানজট পেরিয়ে ছ’ঘণ্টার মধ্যে দেহ পৌঁছে দেওয়া সম্ভবপর নয়। স্বভাবতই দেহদানের উৎসাহ হারিয়ে আত্মীয়স্বজনরা লরি ডেকে, দেহ ও দাহ করার সামগ্রী চাপিয়ে স্থানীয় শ্মাশানে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় বোলপুরের জয়ন্ত স্মৃতি সংঘের মাধ্যমে খবর পান বীরভূম ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্সের সম্পাদক নুরুল হক। তিনি মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নিজ দায়িত্বে লক্ষণবাবুর পবিত্র ইচ্ছা পূরণে অগ্রসর হন তিনি। সেইমতো লরি থেকে দেহ নামিয়ে দুর্গাপুর ব্লাইন্ড রিলিফ সোসাইটিকে খবর দেন। তাঁরা এসে কর্নিয়া সংগ্রহ করে আই ব্যাঙ্কে পাঠান। পরে মৃতদেহটি রামপুরহাট মেডিকেল কলেজে দানের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু, শনি ও রবিবার ছুটির দিন থাকায় ও মৃত শংসাপত্রে ভুল থাকায় দেহ হাসপাতালের নির্দিষ্ট ফ্রিজে রাখা হয়। এদিন বিকেলে অফিসিয়ালি তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দান করেন মৃতের মেয়ে ও জামাইরা।
নুরুল সাহেব বলেন, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে এখনও পর্যন্ত কেউ দেহদান করেননি। তাই আমরা আরজিকরে না পাঠিয়ে দেহ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসি। চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণার কাজে দেহটি কাজে লাগবে। এভাবে শ্মশানের মুখ থেকে শবদেহ ফিরিয়ে নিয়ে এসে মৃত ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পূরণ আমাদের শ্রেষ্ঠ পাওনা।
বৃদ্ধের মেয়ে রুমাদেবী বলেন, বাবারও ইচ্ছা ছিল। তাই বাবার অঙ্গ এবং শরীর দান করার সিদ্ধান্ত নিই। যদি একজনের চক্ষুদানে অন্য কেউ পৃথিবীর আলো দেখতে পান, সে তো ভালো কাজ। সেটাই করেছি। দেহটিও চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণার কাজে লাগবে। অন্যদেরও এই মহৎ দানে আহ্বান জানাচ্ছি।