বিএনএ, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলেছিলেন, বাইরে থেকে টাকার থলি নিয়ে এসে কেউ কেউ ইন্ডোর মিটিং করছে। এদের থেকে সাবধান থাকবেন। হায়দরাবাদ থেকে কেউ কেউ এসে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তিনি হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল মজলিস-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনকেই (মিম) টার্গেট করেছিলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সামশেরগঞ্জ, নবগ্রাম, সূতি এবং জঙ্গিপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় মিম মাথা তোলার চেষ্টা করছে। তারা প্রচার চালানোর জন্য হাতিয়ার করেছে সোশ্যাল মিডিয়াকে। মুর্শিদাবাদের নামে তাদের ফেসবুক পেজও রয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন রাজ্যে তাদের কার্যকলাপ তুলে ধরা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর দলের নেতারাও মিমের মোকাবিলায় মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরে তাঁরা রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি আরও বেশি করে তুলে ধরবেন। শাসক দলের দাবি, অন্যান্য জায়গার মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতেও এই রাজ্য সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তা সংস্কার হয়েছে। ইমাম ভাতা চালু হয়েছে। সংখ্যলঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য ঐক্যশ্রী সহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প চালু রয়েছে। তাই মিম চেষ্টা করলেও এ রাজ্যে মাথা তুলতে পারবে না। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, হায়দরাবাদের সংসদ সদস্যর দলটি মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি মালদহের মতো জেলাগুলিকেও টার্গেট করেছে। লোকসভা ভোটের আগে থেকেই তারা মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু সেসময় কল্কে না পেয়ে তারা পিছু হটে। এবার ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনকে টার্গেট করে মাঠে নামতে চাইছে। শাসক দলের ভোট কাটা তাদের মূল লক্ষ্য।
তৃণমূলের দাবি, এই দলটি বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি’র এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই রাজ্যেও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় তৃণমূলের ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা করার জন্যই আমদানি করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, অন্য লোক বাইরে থেকে আমদানি করে আনলে ডেঙ্গুর মশার মতো কামড়ে দিয়ে চলে যাবে। বাইরে থেকে কেউ এসে ইন্ডোর মিটিং করছে কি না তা নিয়ে তিনি পুলিসকে নজরদারি বাড়ানোর জন্যও বলেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, আমাদের সংগঠন বাড়ানোর জন্য কোনও এজেন্ট বা দালালের দরকার হয় না। আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েই সংগঠন করি। তৃণমূলই এজেন্ট বা দালালের সাহায্য নেয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই সব থানা এলাকাতেই নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ কোথাও ইন্ডোর মিটিং করতে চাইলে কী উদ্দেশ্যে তা করা হচ্ছে তার ইনপুট পুলিস রাখবে। এছাড়া তৃণমূল নেতৃত্বও গ্রামীণ এলাকাগুলিতে জোরদার প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৃণমূলের জেলা নেতা চাঁদ মহম্মদ বলেন, মুর্শিদাবাদে যা উন্নয়ন হয়েছে সবই তৃণমূল সরকারের আমলে হয়েছে। আমরা সারা বছরই মানুষের পাশে থেকে কাজ করি। হঠাৎ করে কেউ বাইরে থেকে এসে কিছু করতে পারবে না। বাইরের রাজ্যের কেউ ভুল বোঝানোর চেষ্টা করলে জেলার বাসিন্দারা তাদের তাড়া করবে। মুর্শিদাবাদের মানুষ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কাউকে ভরসা করে না।