গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক করার সময়েই বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছিলেন। তিনি বৈঠকে শিক্ষা সচিবকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একই ডিপিআর তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে সার্কিট হাউসেই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেখান থেকে বেরনোর সময়েই তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কোর্স চালু করার কথা ঘোষণা করেন। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হওয়া আমাদের কাছে স্বপ্ন ছিল। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। জেলার ছাত্রছাত্রীদের এতদিন উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে যেতে হতো। এবার থেকে জেলায় থেকেই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করতে পারবে। নওদার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা বাবন মণ্ডল বলেন, সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য জেলায় ক্লাস চালু হয়ে যাবে। এর চেয়ে বড় আনন্দের খবর ছাত্রছাত্রীদের কাছে আর কিছু হতে পারে না। জেলার ছাত্রছাত্রীদের এমএ বা এমসি পড়ার জন্য মালদহ কিংবা কল্যাণী যেতে হবে না। তাঁরা এখানেই পড়াশোনা করতে পারবেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি ভীষ্মদেব কর্মকার বলেন, জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা আগেই ঘোষণা হয়েছিল। সেই থেকেই আমরা প্রতীক্ষায় ছিলাম। অবশেষে দিদি ক্লাস চালু করার কথা ঘোষণা করায় ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এটা পুরো জেলার কাছেই আনন্দের খবর। আমতলা যতীন্দ্র রাজেন্দ্র মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র উসমানগণি শেখ বলেন, আমরা নিজের জেলাতেই উচ্চশিক্ষা পাব। এটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছে। জেলার নওদা, ডোমকল, ইসলামপুরের মতো বিভিন্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য এতদিন বাইরের জেলাতে যেতে হতো। তারজন্য অতিরক্ত খরচ হয়ে যেত। কিন্তু নিজের জেলায় পড়াশোনা করতে পারলে খরচ অনেকটাই কমে যাবে। তৃতীয় বর্ষের কলেজ ছাত্র রাধিকেশ মণ্ডল বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ক্লাস চালু করার কথা ঘোষণা করায় আমরা খুব খুশি। এতদিন কোনও সরকার বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা ভাবেনি। একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের জেলায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন। কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, আমরা চাই কৃষ্ণনাথের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হোক। কারণ জেলার শিক্ষা বিস্তারে তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে। সেটা যেন রাজ্য সরকার না ভুলে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো ক্লাস চালু হলে ভালো। কিন্তু অনেক সময় ঘোষণার সঙ্গে বাস্তবের মিল থাকে না।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনই মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু কোর্স শুরু করার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর নির্দেশমতো প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে কী কী বিষয় পড়ানো হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন বিল্ডিংয়ের ডিপিআর তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত ডিপিআর তৈরির কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কৃষ্ণনাথ কলেজ চত্বরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিং তৈরি হবে। তারজন্য জমিও চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প চালু হওয়ায় এই জেলায় মেয়েদের শিক্ষার হার অনেক বেড়েছে। একসময় এই জেলা শিক্ষার দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। কিন্তু এখন জেলার সব ব্লকের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পড়াশোনার আগ্রহ বেড়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীও তেমনটাই জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই জেলার মেয়েরা খুব ভালো পড়াশোনা করছে। ছাত্রছাত্রীরাও পড়াশোনার প্রতি খুব আগ্রহী।